বাহার উদ্দিন বকুল, বর্তমানকন্ঠ ডটকম, জেদ্দা, সৌদি আরব : বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ইংরেজি মাধ্যম জেদ্দা সৌদি আরবের সেরা ইংরেজি মাধ্যমিক স্কুল গুলীর মধ্যে একটি, যা ক্যামব্রিজ পাঠ্যক্রমকে শিক্ষা দেয়। এর শুরু থেকেই বিশ্বব্যাপী প্রতিবছর অনুষ্ঠিত ক্যামব্রিজ ইন্টারন্যাশনাল এক্সাম (সিআইই) এর অধীনে আইজিসিএসই ও এ-লেভেল উভয়ের শীর্ষস্থানীয় পদে শিক্ষার্থীরা শীর্ষস্থানীয় স্থান অর্জন করে। দুর্ভাগ্যবশত, অক্টোবরে ২০১৭ সালে এটি একটি কঠিন পরিস্থিতিতে ছিল তার সাবেক পরিচালনা পরিষদ এর দুর্নীতি এবং স্কুল তহবিলের টাকা আত্বসাথের অভিযোগে। এ ধরনের অনিশ্চিত অবস্থায়, বাংলাদেশ দূতাবাস রিয়াদ ও বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল জেদ্দা সঙ্কট সমাধানে পদক্ষেপ গ্রহণ করেন এবং বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল জেদ্দায় অভিবাবকদের নীয়ে একটি মতবিনিময় সভা ও করেন। অধিকাংশ অভিবাবকদের সুপারিশের ভিত্তিতে, বাংলাদেশ দূতাবাস ও বাংলাদেশ কনস্যুলেট সিলেকশন এর মাধ্যেমে নতুন পরিচালনা পরিষদ মনোনীত করেছে এবং অনুমোদনের জন্য সৌদি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে জমা দিয়েছে। তা গত কয়েকদিন আগে অনুমোদিত হয়েছে। তাই, জেদ্দা কনসুলেট প্রাঙ্গণে অভিবাবকদের নীয়ে মতবিনিময় সভা করেছে জেদ্দা বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল। উক্ত মতবিনিময় সভার সভাপতিত্ব করেন স্কুল পরিচালনা পরিষদ এর নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান, মোহাম্মদ ওমর ফারুক, কাউন্সিলর আলতাফ হোসেন এর পরিচালনায় এতে প্রধান অতিথি ছিলেন জেদ্দা কনস্যুলেটের কনসাল জেনারেল এফ এম বোরহান উদ্দিন। বিশেষ অতিথি গনের মধ্যে ছিলেন, শ্রম কাউন্সিলর আমিনুল ইসলাম, ভাইস কনসাল মোস্তফা জামিল, অধ্যক্ষ এস এম মিজানুর রহমানসহ অভিবাবক এবং শিক্ষক বৃন্দ। এসময় প্রধান অতিথি জানান, কনসাল জেনারেল নতুন পরিচালনা পরিষদ সদস্যকে এই বিষয়ে নিশ্চিত করার জন্য আহ্বান জানান যে, শিক্ষকদের এবং শিক্ষার্থীদের শিক্ষার জন্য স্কুলটি পরিবেশগত উপযোগী। তিনি শিক্ষকদের প্রতি আহ্বান জানান যে, আসন্ন সিআইই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ছাত্রছাত্রীদের জন্য বীজ শিক্ষার্থীরা অব্যাহতভাবে সাফল্য অর্জন করে। স্কুলের জন্য নীতি নির্দেশিকা আপগ্রেড করার জন্য পরিচালনা পরিষদকে বিভিন্ন কর্মসূচী, স্কুলের নিয়ম এবং নির্দেশনা মেনে চলার নির্দেশ দেওয়া হয়। তিনি স্কুল, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, স্বচ্ছভাবে চালানোর জন্য নতুন পরিচালনা পরিষদ এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার পরামর্শ দেন। এবং যেসমস্ত অভিবাবকগণ এখন পর্যন্ত স্কুলের বকেয়া বেতন পরিষদ করে নাই তাদেরকে অতি তাড়াতাড়ি বকেয়া বেতন পরিষদ করার আহ্বান জানান। না হয় কনস্যুলেটের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিকে, জেদ্দা বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল জেদ্দা ইংরেজি শাখার সুবিধার উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক এক কোটি টাকার অনুধান দিয়েছে, কনসাল জেনারেল আশ্বস্ত করেন যে বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে একটি জমি কেনার জন্য এবং নিজস্ব জায়গায় স্কুল ক্যাম্পাস নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ সংগ্রহের চেষ্টা করবেন। তিনি বলেন, “বাংলাদেশ আর এলডিসি দেশ নয় এবং জাতিসংঘের অসামান্য উন্নয়নের জন্য এটি মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে। অতএব, বাংলাদেশ সরকার বিদেশে এনআরবি শিশুদের জন্য স্কুল অর্থায়ন জন্য যথেষ্ট অর্থ আছে। ” শিক্ষকদের আমাদের সমাজে সর্বোচ্চ স্থান আছে কারণ তাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম গড়ে তোলার পবিত্র দায়িত্ব রয়েছে”। অগ্রবর্তী শিক্ষকদের কর্মক্ষমতা পর্যায়ক্রমে মূল্যায়ন করা হবে এবং তাদের পেশাদার শ্রেষ্ঠত্বের জন্য তাদের পুরস্কৃত করা হবে।
নতুন পরিচালনা পরিষদ এর ০৭ সদস্য হল:
০১ঃ মোহাম্মদ ওমর ফারুক (চেয়ারম্যান)
০২ঃ ড. মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম (ভাইস চেয়ারম্যান)
০৩ঃ প্রকৌশলী মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম (সদস্য)
০৪ঃ প্রকৌশলী মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ (সদস্য)
০৫ঃ ড. মোহাম্মদ মুজিবুর রহমান (সদস্য)
০৬ঃ প্রকৌশলী মোহাম্মদ শামীম ইকবাল (সদস্য)
০৭ঃ মোহাম্মদ আশরাফুল আলম (সদস্য)
অতিরিক্ত ৩জন সদস্য
০১ঃ মোহাম্মদ আকবর হোসেন
০২ঃ মোহাম্মদ মোস্তফা মনোয়ার
০৩ঃ মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম
স্কুল পরিচালনা পরিষদ বোর্ড চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ওমর ফারুক জানান, যে আমাদের এই স্কুলটি নো লচ-নো-প্রফিট ভিত্তিতে কেবল মাত্র অভিবাবকগণের অর্থে পরিচালিত তাই স্কুলের জন্য বেশ কিছু নতুন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যেমনঃ
১। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নিজস্ব জায়গায় স্কুল স্থানান্তর করা এ ব্যাপারে অভিভাবকদের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।
২। স্কুলের অবকাঠামো উন্নয়ন ও স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণে সহযোগিতা করার জন্যে স্কুল তথা অভিবাবকদের পক্ষ থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বরাবর সম্মিলিত ভাবে আবেদন করা হবে।
৩। কারিকুলামের উন্নয়ন করার জন্য অভিজ্ঞদের নিয়ে পাঠ্যক্রম বোর্ড ফর্ম করা হবে
৪। পরীক্ষার প্রশ্নপত্র মডারেশন প্যানেলের মাধ্যমে রিভিউ করা হবে
৫। গুণগত মানের শিক্ষা নিশ্চিত করতে হলে শিক্ষকদের তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী বেতনভাতা দিতে হবে। যেহেতু অভিবাবকবৃন্দ চাচ্ছেন শিক্ষকদের টিউশন বন্ধ করে দেওয়া সেক্ষেত্রে সৌদি আরবের বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা বিবেচনা করে বেতন বৃদ্ধি করতে হবে। কিন্তু বর্তমানে ছাত্র ছাত্রীদের কাছ থেকে ১০ মাসের টিউশন ফি নেওয়া হয় অথচ শিক্ষক কর্মচারীদের ১২ মাসের বেতনভাতা পরিশোধ করতে হয়। যেহেতু স্কুলের আয়ের অন্য কোন উৎস নেই সেহেতু ১২ মাসের টিউশন ফি নেওয়া যায় কি না তা বিবেচনা করার জন্য সম্মানিত অভিবাবকবৃন্দের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হচ্ছে।
৬। শিক্ষক ও ছাত্র ছাত্রীদের সঠিক অনুপাতে নির্ধারণ করে অতিরিক্ত শিক্ষক ছাটাই করা।
৭। অযোগ্য শিক্ষকদের অব্যাহতি দেওয়া।
৮। শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য শিক্ষকদের ব্রিটিশ কাউন্সিল এর মাধ্যমে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা।
৯। জুনিয়র ক্লাসে ছাত্র ছাত্রীদের ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা ও উচ্চারণ শুদ্ধ করার জন্য নেটিব ইংরেজি শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া।
১০। নতুন অ্যাকাউন্টিং সিস্টেম ইনস্টল করা যাতে আয়-ব্যয়ের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা যায়।
১১। অতিরিক্ত পাঠ্যক্রম কার্যক্রম বৃদ্ধি করা হবে
১২। অভিজ্ঞ ও দক্ষ অধ্যক্ষ নিয়োগ দেয়া
১৩। যোগ্য শিক্ষক ও মেধাবী ছাত্র ছাত্রীদের বাছাই করে পুরস্কার দেয়া হবে।
১৪। দিবা যত্ন কেন্দ্র কে আধুনিক ও মানসম্মত করে তোলা হবে।
১৫। স্কুল লাইব্রেরী ইতিমধ্যেই সংস্কার করা হয়েছে এবং আরো বইপত্র সংগ্রহ করে যুগোপযোগী করে তোলা হবে।
১৬। স্কুলে নাসিং ব্যবস্থার উন্নয়ন করা হবে।
১৭। সকল সম্পদ এর তদন্ত্র করে তালিকাবদ্ধ্ব করা হবে। যে সকল সম্পদ ব্যবহারযোগ্য নয় সেগুলো নিষ্পত্তি করা হবে এবং অন্যান্য সম্পদ এর যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করা হবে।
১৮। বিগত বোর্ড বাংলাদেশের থেকে পতকপ্পি দারা ৪২ লাখ টাকার বই কিনেছিল ছাপা বই মান সন্মত নয় অতিএব বর্দ বিবেচনা করে দেখে এই গুলির পিজিকিলি ইনভেন্তেবি করার পরে এগুলোর মধ্যে যে বই কারিকুলামের সাথে মিলে সেগুলো এবং আরো কিছু নতুন বই কিনে ছাত্র ছাত্রীদেরকে বিনা লাভের ভিত্তিতে বিতরন করা হবে।
১৯। আইসিটি, রসায়ন, পদার্থবিদ্যা এবং জীববিদ্যা ল্যাবরেটরি নতুন যন্ত্রপাতি ও রাসায়নিক দিয়ে আধুনিকীকরণ করা হবে।
২০। স্কুল ক্যন্টিন এ মানসম্মত খাবারের ব্যবস্থা করা হবে।
২১। নিয়োগ বিধিমালা প্রনয়ন করে দক্ষ ও অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক বিশেষজ্ঞ দিয়ে নিয়োগ বোর্ড গঠন করা হবে।
২২। বিশিষ্টজন এবং অভ্যন্তরীণ অডিট বোর্ড দিয়ে নিয়মিত হিসাব অডিট করা হবে এবং তা নির্দিষ্ট সময় পর-পর তা অভিবাবকদের জানানো হবে উপস্থিতি নিশ্চিত করা হবে।
২৪। দীর্ঘ দিন ধরে ৬টি টয়োটা বাস কিস্তিতে নেওয়া হয়েছিল ইতিমধ্যেই তা স্কুলের নামে হস্তান্তর করা হয়েছে।
২৫। হিসাব ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য বিক্রয় মেশিন পয়েন্ট এর ব্যবস্থা করা হবে এবং নগদ সংগ্রহ দ্রুত ব্যাংক এ জমা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।
২৬। ভর্তি নীতি করা হবে যাতে অযোগ্য কেউ স্কুলে ভর্তি হতে না পারে।
২৭। প্রায় গত দেড় বছর ধরে স্কুলে প্রয়জনিয় সঙ্কখক সৌদি স্টাফ না থাকায় (NITAQAT SYSTEM) লাল হয়ে আছে। এই জন্য জইন্য অনেক কার্যক্রম কার্যিওম পরিচালনা করা যাচ্ছে না। যেমন ইতিমধ্যেই শিক্ষকসহ ১৪ জনের আইডি মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে যত দ্রুত সম্ভব সৌদি স্টাফ নিয়োগ দিয়ে তা (NITAQAT SYSTEM) এর মাধ্যমে সবুজে পরিনত করার ব্যবস্থা করা হবে। এ জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় এর প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী ইতিমধ্যেই ৬ জন সৌদি নিয়োগ দেয়া হয়েছে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী আরো ব্যবস্থা নেওয়া হবে।