ঢাবি,বর্তমানকণ্ঠ ডটকম: বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলা অনুষদের শিল্পকলার ইতিহাস বিভাগে দু’জনকে প্রভাষক পদে নিয়োগের সুপারিশ করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এই পদে নিয়োগ প্রত্যাশীরা।

এ বিষয়ে চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী বিজ্ঞাপন ছাড়া স্থায়ী পদে নিয়োগের সুযোগ নেই।’ তিনি এই কার্যকলাপে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

এর আগে গত ২১ ডিসেম্বর দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশ পত্রিকায় এই বিভাগে দুজন সহকারী অধ্যাপক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়।

এর ভিত্তিতে গঠিত নিয়োগ সংক্রান্ত সিএনডি কমিটি বধুবার বিভাগের দুইজন প্রভাষককে সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতির অনুমোদন দেয়। একইসঙ্গে ওই বিভাগে দুজনকে প্রভাষক পদে নিয়োগের সুপারিশ করেন তারা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক নাসরীন আহমাদের নেতৃত্বে সিএনডি কমিটিতে চারুকলার ডিন নিসার হোসেন ছাড়াও শিল্পকলার ইতিহাস বিভাগের চেয়ারপারসন সাবরিনা শাহনাজ ও বিভাগের দুজন শিক্ষক ছিলেন।

মৌখিক পরীক্ষার পর বিভাগের প্রভাষক মাসুদা খাতুন জুঁই ও সঞ্চয় চক্রবর্তীকে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতির সিদ্ধান্ত হয়। দুই প্রভাষকের পদোন্নতি হওয়ায় প্রভাষকের দুটি পদ খালি হয়। ওই দিনই শূন্য পদে আক্তারুজ্জামান রানা ও নিফাত সুমতানাকে প্রভাষক হিসেবে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপ-উপাচার্য নাসরীন আহমাদ বলেন, ‘এ বিভাগে শিক্ষক সংখ্যা কম। তাই সেই বিবেচনায় আবেদনকারীদের মধ্য থেকে দু’জনকে প্রভাষক পদে সুপারিশ করা হয়েছে।’

‘যারা বলছেন বিজ্ঞপ্তি ছাড়া নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তারা কেন আবেদন করেনি, বিশ্ববিদ্যালয় তো আবেদন গ্রহণ করে। বিভাগ যদি আরও শিক্ষকের প্রয়োজনীয়তা আছে বলে মনে করে তাহলে আবেদনের জন্য সুযোগ করে দিতে পারে’- বলেন নাসরীন।

এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উক্ত বিভাগের এক শিক্ষক বলছেন, ‘প্রকাশিত ওই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে শুধু সহকারী অধ্যাপক পদে দু’জন নিয়োগের কথা বলা হয়েছে। প্রভাষক পদে নিয়োগের কথা উল্লেখ করা হয়নি।’

প্রভাষক পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি না দেয়ায় অনেক ভালো শিক্ষার্থী আবেদন করতে পারেনি মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘এ নিয়োগের কারণে যোগ্য ছাত্রদের আবেদন থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে।’

আবেদন করতে না পারা কয়েকজন নিয়োগ প্রত্যাশী বলেন, সহকারী অধ্যাপক পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি হয়েছিল। প্রভাষক নেয়া হবে তা তারা জানতেই পারেননি।

বিভাগের চেয়ারপারসন তার অনুগত শিক্ষার্থীদের শিক্ষক পদে নিয়োগ দেয়ার জন্য এবং অন্যরা যাতে আবেদন করতে না পারে সেজন্য এই ‘ষড়যন্ত্র’ করেছেন বলে অভিযোগ নিয়োগ প্রত্যাশীদের।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তাদের একজন বলেন, ‘সহকারী অধ্যাপক পদে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর বিভাগের চেয়ারম্যানের কাছে অনেকেই জানতে চেয়েছিলাম, প্রভাষক পদে আবেদন করতে পারব কি না। তখন তিনি বলেছিলেন, শুধু সহকারী অধ্যাপক পদে নেয়া হবে। প্রভাষক পদে নেয়া হবে না।’

বিজ্ঞপ্তি না দিয়ে কীভাবে প্রভাষক নিয়োগ দেয়া হল তা জানতে চাইলে চারুকলা অনুষদের ডিন নিসার হোসেন  ব্রেকিংনিউজকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধিতে বলা হয়েছে, যতটুকু আমি জানি, যে পদে নিয়োগ দেয়া হবে সেই পদে বিজ্ঞাপন দিতে হবে। বিজ্ঞাপন ছাড়া স্থায়ী পদে নিয়োগ দিতে পারবে না।’

‘এই বোর্ডে প্রভাষক পদে নিয়োগের আবেদন যদি যেয়ে থাকে তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি ব্যতিরেকে ভুলক্রমে সেটা গেছে। আর প্রভাষক পদে যাদের আবেদনপত্র নেয়া হয়েছিল তাদের ডাকাটা ঠিক হয়নি। যেহেতু বিজ্ঞাপনে পদ নেই, অতএব আবেদনেরও সুযোগ নেই’ বলেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, ‘যারা প্রভাষক পদের জন্য আবেদন করেছে সেই কাগজ গৃহীত হয় কিভাবে? গৃহীত হওয়ার আসলেই কোনো সুয়োগ নেই। এটা হয়তো ভুলভাবে হয়েছে অথবা এটা গ্রহণ করা ন্যায়সঙ্গত হয়নি। ছাত্ররা যখন বলেছেন তাদের বঞ্চিত করা হয়েছে, এর জবাব তাদের দিতে পারিনি।’
এদিকে এ সংক্রান্ত নিয়োগের বিষয়ে কিছু জানেন না বলে দাবি করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।