নিজস্ব প্রতিবেদক,বর্তমানকণ্ঠ ডটকম: ব্যাংকের ভেতরে একজন সাদা পোষাকধারীকে পাঠিয়ে কে কতো টাকা উত্তোলন করছে তার খোঁজ নেওয়া হতো। এরপর মোটা অঙ্কের টাকা উত্তোলনকারীর পিছু নিত চক্রটি। পরে নিরাপদ স্থানে গিয়ে টার্গেট করা ব্যক্তিকে অস্ত্রের মুখে মাইক্রোবাসে উঠিয়ে নিয়ে টাকা হাতিয়ে নিয়ে ছেড়ে দিত। এ ধরনের একটি সিণ্ডিকেটের বেশ কয়েকটি দল রাজধানীসহ বেশ কয়েকটি জেলায় ভুয়া ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ছিনতাই ও চাঁদাবাজি করে আসছে।
রাজধানীর মগবাজার এলাকা থেকে চার ভুয়া ডিবি পুলিশ আটক করার পর রবিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সম্মেলন কক্ষে একথা বলেন মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার আব্দুল বাতেন।
আটকরা হলেন- শফিকুল ইসলাম রানা, আপেল, ইব্রাহিম ও ইমরান। তাদের কাছ থেকে ওয়াকিটকি, ডিবি লেখা জ্যাকেট, খেলনা পিস্তল ও হ্যান্ডকাপ জব্দ করা হয়েছে।
ডিএমপি’র যুগ্ম কমিশনার আব্দুল বাতেন বলেন, ‘গতকাল সন্ধ্যার আগে রমনার ওয়ারলেস মোড় এলাকা থেকে খবর আসে ভুয়া ডিবি পুলিশ সেখানে অভিযানে গেছে। ছিনতাইয়ের জন্য তাদের একজন সাদা পোষাকে মগবাজারের একটি বেসরকারি ব্যাংকের ভেতরে প্রবেশ করেছে। সে অবজার্ভ করছিল কে কি পরিমাণ টাকা উত্তোলন করছে। এরপর একজন বিগ অ্যামাউন্টের টাকা উত্তোলনকারীর পিছু নেয়। পরে টাকা উত্তোলনকারীকে মাইক্রোবাসে উঠানোর সময় হাতেনাতে চার জনকে আটক করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটকরা জানায়, তারা ব্যাংক থেকে বড় অ্যামাউন্ডের টাকা উত্তালনকারীকে টার্গেট করে। এরপর সুবিধামতো অপহরণ কিংবা ডিবি পুলিশ পরিচয়ে মাইক্রোবাসে উঠিয়ে নেয়। নিরাপদ স্থানে গিয়ে উত্তোলন করা টাকা হাতিয়ে নিয়ে ছেড়ে দেয়। কখনো কখনো আটকে রেখে ব্যাংকের চেক বইয়ে স্বাক্ষর করিয়ে টাকা উত্তোলন করে থাকে।
ডিএমপি’র এ যুগ্ম কমিশনার বলেন, আটকদের মধ্যে শফিকুল ইসলাম রানা জানিয়েছেন, তিনি সাবেক সেনা কর্পোরাল। শারীরিক অযোগ্যতার কারণে তিনি চাকরিচ্যুত হয়েছে। মূলত তার নেতৃত্বেই বেশ কয়েকটি অভিযান চালিয়েছে ভুয়া ডিবি পুলিশের দল।
দলগুলো এ রকম কার্যক্রম রাজশাহী রংপুর, বগুড়া নাটোর, সিরাজগঞ্জসহ দেশের বেশ কয়েকটি জেলায় ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজি ও ছিনতাই করেছে। মোটা অঙ্কের টাকা বহনকারী ব্যক্তিদের আগে থেকে ফলো করে অপহরণ করে। পরে টাকা নিয়ে ছেড়ে দেয়। কাউকে কাউকে গাড়িতে উঠিয়ে বিভিন্ন হয়রানিমূলক মামলার ভয় দেখিয়ে বিকাশের মাধ্যমে পেমেন্ট নিতো। বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসবের সময় তাদের দৌরাত্ম বেড়ে যায়।
তাদের আরও কয়েকটি গ্রুপ রয়েছে। তাদের ধরতে প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) বলেও জানান তিনি।