1. khandakarshahin@gmail.com : bangla :
  2. cmi.sagor@gmail.aom : cmi Sagor : cmi Sagor
মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:৫৯ পূর্বাহ্ন
বর্তমানকণ্ঠ :-
Welcome To Our Website...



দুই ধারার রাজনীতি ও তৃতীয় ধারার সমীকরণ

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৬
  • ১৯৪ Time View

1474534180১৯৭০ সালে আওয়ামী লীগ, পিপিপি, জামায়াত ইসলামী (মওদুদী), ওলামায়ে ইসলাম, নেজামে ইসলাম ন্যাপ (ওয়ালী খান), পিডিপি (নসুরুল্লাহ খান), মুসলীম লীগ (কাইয়ুম), তেহরিক পার্টি (আসগর খান), পাকিস্তানের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করলেও পূর্ব পাকিস্তানে নূরুল আমিন ও ব্যারিষ্টার কামরুল ইসলাম মোঃ সালাউদ্দিন পিডিপি ও ভাসানী (ন্যাপ) থেকে মাত্র ২টি আসনে জয়লাভ করে। আওয়ামী লীগ বাদে আর কোন দলই পূর্ব পাকিস্তান থেকে জয়লাভ করতে পারেনি। মোদ্দাকথা ভোটের হিসাবে আওয়ামী লীগ সারা পাকিস্তানে বিপুল ভোটে জয়লাভ করে। পশ্চিম পাকিস্তান থেকে মুসলীম লীগ, তেহরিক পার্টি, পিডিপি ও ন্যাপ বেশ কয়টি আসনে জয়লাভ করলেও পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) পশ্চিম পাকিস্তান থেকে সংখ্যাধিক্য বিপুল ভোটে জয়লাভ করে থাকে।
এতগুলো দল পাকিস্তান জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করলেও আসলে আওয়ামী লীগ ও পিপিপির মধ্যে দুই ধারায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তবে নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পূর্ব পাকিস্তানে নিরংকুশ বিজয় লাভ করে এবং সিটের হিসেবে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকে পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হলে ৭৩ সালের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরংকুশ বিজয় লাভ করে থাকে। এরই মধ্যে আওয়ামী লীগ থেকে বেড়িয়ে আসা এবং বি-টিম হিসেবে আলোচিত নবগঠিত জাসদের বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র ও শ্রেণী সংগ্রামের রাজনীতি জনগণের নিকট আস্থা আনতে পারিনি। বরং অল্প দিনের মধ্যেই জাসদের রাজনীতি বিভিন্ন নেতার নামের অধ্যাক্ষরে ব্র্যাকেট বন্দি হয়ে যায়। তম্মধ্যে দাদা ভাই হিসেবে পরিচিত সিরাজুল আলম খান, মেজর (অব:) জলিল, আ.স.ম. আবদুর রব, আঃ আউয়াল, রাধাকৃষ্ণ, রাজা প্রমুখদের নাম উল্লেখযোগ্য। তাছাড়া ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বরের সিপাহী জনতার বিপ্লবকে কেন্দ্র করে জাসদের বিপ্লবী রাজনীতি জনমনে বিভিন্নভাবে সমালোচিত হয়ে থাকে। যার পরিণতিতে জাসদের একটি বিশেষ অংশ গণবাহিনীতে রূপ নেয়। যার প্রেক্ষাপটে জাসদের অগণিত নেতা কর্মি যেমনি মর্মান্তিকভাবে নিহত হয়, তেমনি জাসদের হাজার হাজার নেতাকর্মির কারাগারে ঠাঁই হয়। এরই মধ্যে জাসদের বিভিন্ন অংশ পরবর্তী সময় আওয়ামী লীগ, বিএনপি এবং একসময় জাতীয় পার্টিতে মিশে গিয়ে মন্ত্রী এবং ২৩ দলীয় “সম্মিলিত বিরোধী দল বা কপ” নামীয় জোট নিয়ে ১৯৮৮ সালের ভোটার বিহীন নির্বাচনে সংসদে বিরোধী দলের আসন অলংকিত করে। তারপর আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির ক্ষমতার সময় আ.স.ম. আবদুর রব ও শাহজাহান সিরাজ ঘুরে ফিরে মন্ত্রীত্ব লাভ করে। বর্তমানে আওয়ামী লীগের ১৪ দলীয় মহাজোটে শরীক হয়ে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারী নির্বাচনের পর জাসদের একাংশের নেতা হাসানুল হক ইনুও বর্তমান সরকারের মন্ত্রী পরিষদে স্থান পায়। যদিও জাসদ (ইনু) বর্তমানে দুই ধারায় বিভক্ত হয়ে পড়েছে। তবে দৃশ্যত জাসদ তিন ভাগে বিভক্ত। এর মধ্যে রয়েছে জাসদ (রব), জাসদ (ইনু) ও জাসদ মঈনুদ্দীন খান বাদল গং। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট মর্মান্তিক ও ঐতিহাসিক পরিবর্তনের পর খন্দকার মোস্তাক আহম্মদ গংদের ৮৩ দিনের ক্ষমতার পর জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে উপ-

রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবদুস সাত্তারের নেতৃত্বে জাগদল এবং জাতীয়তাবাদী ফ্রণ্ট গঠন করে। তারপর অনেকগুলো দলের নেতা কর্মিদের নিয়ে ১৯৭৮ সালে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল- বিএনপি গঠন করে।

১৯৭৯ সালে দেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে ছোট বড় অনেকগুলো দল ও স্বতন্ত্র সদস্যরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে থাকে। নির্বাচনে কিছু দল ও স্বতন্ত্র সদস্যরা জয়লাভ করলেও মুলত বিএনপি ও আওয়ামী লীগ দুই ধারায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তাতে আওয়ামী লীগ ৩৪টি আসন পেয়ে সংসদে বিরোধী দলের মর্যাদা লাভ করে থাকে। আসাদুজ্জামান খান ৭৯ এর সংসদে বিরোধী দলের নেতা মনোনীত হন এবং সংসদে বিরোধী দলের নেতা হিসেবে বাংলাদেশ পার্লামেন্টে সর্ব প্রথম মন্ত্রীর মর্যাদায় সরকারী আবাসন, গাড়ী, ষ্টাফ ও সকল প্রকার সরকারী সুযোগ সুবিধা লাভ করে থাকেন। ১৯৭৩ এবং ১৯৭৯ ইর পর ৮৬, ৮৮, ৯১, ৯৬-১৫ ফেব্র“য়ারী, ৯৬-১২ জনু, ২০০১, ২০০৮ ও ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারী পর্যন্ত অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বিএনপি ৮৬, ৮৮ ও ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারী নির্বাচনে যেমনি অংশগ্রহণ করেনি, তেমনি আওয়ামী লীগ ৯৬-১৫ ফেব্র“য়ারী  এবং ৮৮ সালের নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেনি। ৮৬ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশ গ্রহণ করে এবং সংসদে বিরোধী দলের নেতা হিসেবে উপবিষ্ট হয়। যে সমস্ত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি অংশ গ্রহণ করেছে তাতে কোন দল বা জোট কতটুকু আসন পেয়েছে তা বিচার না করে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) প্রদত্ত ভোটের হিসেব নিকেশ মিলালে দেখা যায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির ভোটের ব্যবধান খুব বেশী নয়। তদোপরি দুই ধারায় (আওয়ামী লীগ – বিএনপি) এ নির্বাচনের বাহিরে অন্য দলগুলোর নির্বাচনী ফলাফলে জামানত বাজেয়াপ্তই নয়, বরং ইসির নির্বাচনী ফলাফল অনেক দলের প্রাপ্ত ভোটের অংক এতো নাজুক ছিল সংগত কারণেই তা উল্লেখ করা হয়নি।

অর্থ্যৎ যে বা যারা যত কথাই বলুকনা কেন যত ধরনের হাঁক ডাক বর্ষন করোকনা কেন, ১৯৭০ সালের নির্বাচন যেমনি ছিল আওয়ামী লীগ ও পিপিপির মধ্যে দুই ধারায় বিভক্ত তেমনি ১৯৭৫ সালের পর এদেশে রাজনীতি ও ভোটার হিসেব দুই ধারায় বিভক্ত। একদিকে যেমন আওয়ামী লীগ বা আওয়ামী লীগ সমর্থিত জোট, তেমনি অপরদিকে বিএনপি বা বিএনপি সমর্থিত জোটের তাৎপর্যই চোখে পড়ার মতো।

যারা এখনো রাজনীতির তৃতীয় ধারার কথা বলে, দেশের প্রথিতযশা রাজনীতিকদের মতামতে দেখা যায় এটা নাকি শুধু তাদের কথার কথন ও বচন বিন্যাস। তদোপরি আওয়ামী লীগ, বিএনপি ধারার রাজনীতি, মহাজোট ও জোটের সাথে ইতোমধ্যে ডান ও বাম এবং বাম, ডান ও ইসলামপন্থি রাজনীতির সংমিশ্রণ আগেভাগেই যবনিকাপাত হয়েছে। তাছাড়া বাম, ডান, ডান ও বাম এবং ইসলামী ধারার দলগুলো যদি এককভাবে কোন একটি মাত্র বড় দলের সাথে মিশে যেত এবং বড় অন্য দলের সাথে মিশে না যেত, তবে হয়তো প্রদীপের মিটমিট আলোর মত তৃতীয় ধারার কোন না কোন ক্ষীণ সুযোগ পরিলক্ষিত হত। কিন্তু অবস্থাটা এমন হয়েছে এ দেশে দুই ধারা ব্যতিত তৃতীয় ধারার রাজনীতির ব্যাপারে সম্যক চিন্তা করার সুযোগ আছে বলে অনেকেই মনে করেননা।

তারপরও বড় দুই দলের অহমিকা ও তাদের ভুলের কারণে যদি দেশের জনগণের নিকট বিভ্রান্তি অসংগতি মনে হয় তারপরও রাজনৈতিক জগা খিচুড়ির প্রেক্ষাপটে তৃতীয় ধারার পতাকা তলে আসার মতো তেমন অবস্থা লক্ষ্য করা যায়না। এমনকি যারা নিজেদেরকে তৃতীয় ধারার কমরেড ও রাজনীতিক মনে করেন, তারাও নিরপেক্ষ ও আবেগহীন দৃষ্টিতে ভেবে থাকলে তৃতীয় ধারার চিন্তা মাথায় মগজে না আনারই কথা। আর যদি তৃতীয় ধারার চিন্তা করতেই হয় তবে দেশের জনগণকে যেমনি সংগঠিত করতে হবে, তেমনি বড় দলগুলোর রাজনৈতিক লেজুড় বৃত্তি থেকে মাথা মগজকে ভালোভাবে টার্ন করতে হবে। অপরদিকে দিনে বিরোধীতা রাত্রে সমঝোতা এই প্রবণতা থেকে সরে আসতে হবে। এদেশের মানুষ সহজ সরল হলেও বোকা নয়। দেখে, শুনে ও বুঝে না বোঝার ভান করে থাকে। এদেশের মানুষ শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও জননেত্রী শেখ হাসিনা এবং অপর দিকে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সহধর্মিণী  হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী, বিএনপির চেয়ারপারসন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি সমধিক আত্মপ্রত্যয়ী। ২০০৭ সালে এক এগারোর সময় যখন দুই নেত্রী শেরে বাংলা নগরের ক্যাঙ্গাঁরো কোর্টের আবাসিক কারাগারে আটক ছিলেন, সেই সময় তদানীন্তন ফখরুদ্দীন, মঈনুদ্দীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার শত চেষ্টা করে এবং দুই দলের কিছু নেতাদের মাধ্যমে সংস্কারপন্থি সৃষ্টি করেও দুই দলের মধ্যে তেমন কোন ভাঙন সৃষ্টি করতে পারেনি। সেই সময় অনেকেরই ধারণা ছিল হয়তোবা বড় দুই দলে কিছু একটা ঘটতে পারে। কিন্তু দেখা গেছে মিডিয়ায় ও পত্রিকায় কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তিকে প্রিভিলেইজ দিয়ে প্রতিনিয়ত খবরের শিরোনাম করলেও বাস্তবে তেমন কোন ফলাফল বয়ে আনেনা। ওরাই পরবর্তী সময় তাদের ভুল স্বীকার করে দুদলেই ফিরে আসলেও আজো লক্ষ্য করলে দেখা যায় ঘরছাড়া অনেকেই আজো স্বগৃহে ফিরে আসতে পারেনি। এ ব্যাপারে একজন বর্ষিয়ান রাজনীতিক মন্তব্য করে বলেছেন, রাজনীতি যেমন সুখের তেমনি নিষ্টুরও বটে। সম্রাট অশোক স্বীয় ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য ৯৯ জন জ্ঞাতি ভ্রাতাকে হত্যা করে। তেমনি আওরঙ্গজেব বৃদ্ধ পিতা সম্রাট শাজাহানকে আগ্রার দূর্গে বন্দি করে রাখে তেমনি সমসাময়িক ক্ষমতার রাজনীতিতে নেপালের জ্ঞানেন্দ্র নিজের সহোদরকে ক্ষমতাচুৎ করতে যে কালিমা গায়ে লেপন করেছে, তা ইতিহাস থেকে মুছে যাওয়ার নয়।

এরশাদ কিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন তার দল ও সহধর্মিনী রওশন এরশাদ কিভাবে সংসদের বিরোধী দলের নেতা নির্বাচিত হয়েছেন, তা নতুন করে ব্যাখ্যা করার প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে হয় না। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারীর নির্বাচনকে নিয়ে

এরশাদ যে পালাবদলের রাজনীতিতে অবতীর্ণ হয়ে ছিলেন তা কিন্তু ভুলার নয়। তিনি এক পর্যায়ে বলেছিলেন, বিএনপিকে মাঠে রেখে আমি এককভাবে নির্বাচনে গেলে দেশের মানুষ আমাকে বেঈমান ও থু থু দিবে, গালিগালাজ করবে। তারপরও হুঃ মুঃ এরশাদ সি.এম.এইচে ভর্তি নাটক থেকে শুরু করে গলফ খেলা এবং সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেওয়ার সময়ও সারা দেশের মানুষের নিকট হাসি তামাশার খোরাকে পরিণত হন। এখন আবার জোরে শোরে বলছেন, আগামী সংসদ নির্বাচনে ৩০০ শত আসনে তিনি এককভাবে দলীয় প্রার্থী দেবেন। এ ধরণের কথা তিনি বহুবার বলেছেন। এমনকি ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারীর নির্বাচনের সময়ও এই কথা বলে পরে ১৪ দলীয় মহাজোটের প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেন। ত্রিশংকু জাপার একাংশের নেতা কিভাবে ৩০০শত আসনে এককভাবে নির্বাচন করবেন বলে ইচ্ছা ব্যক্ত করেন তা অনেকেই ভেবে চিন্তে হদিস পায়না। যদিও এখনো এরশাদের মাথার উপর জেনারেল মঞ্জু হত্যার মামলাসহ আরো অনেক মামলা ঝুলছে।  প্রথমতঃ দেশের উপজেলা, সিটি, পৌরসভা ও ইউপি নির্বাচনে ইসির ভোটের হিসেব মতে এরশাদতো দুরের কথা সুস্থ মস্তিষ্কের কোন মানুষের পক্ষে কোন অবস্থাতেই এ আশাবাদ পোষন করার কথা নয়। তাছাড়া অনেকেই বলে থাকেন, মহাজোটে শরীক না হলে জাপা এরশাদ বিরোধী দলে যাওয়া তো দুরের কথা, তার দল অবশ্যম্ভাবী সংকটে পড়ে গিয়ে অকুল সাগরের তরীর ন্যায় হাবুডুবু খেত। দ্বিতীয়তঃ এরশাদের দল সংসদের বিরোধী দল হলেও এমন গোঁজামিলের বিরোধী দল বাংলাদেশ ছাড়া সার্ক দেশ সমূহের মধ্যে পাকিস্তান, ভারত, নেপাল, শ্রীলংকা, মালদ্বীপ, ভুটান ও আফগানিস্তানের মধ্যে চক্ষু সদৃশ হয় না। অনেকে বর্তমান সংসদের বিরোধীদলকে ভানুমতির খেলা বলেও উপহাস করে থাকে। কারণ বিরোধী দলে থাকলেও দলের চেয়ারম্যান মন্ত্রীর মর্যাদায় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ বিদেশ দূত অপর দুইজন প্রতিমন্ত্রী এবং একজন পূর্ণ মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।

এক সাগর রক্তের বিনিময়ে বিশ্বের মানচিত্রে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশ আমাদের গৌরব ও অহংকার। দেশের ভাবমূর্তি খাটো করার অধিকার কারো নেই। কিন্তু লক্ষ্য করলে দেখা যায়, মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রী ২৯/০৮/২০১৬ ইং বাংলাদেশ সফরে আসলে সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদের সাথে কোন আনুষ্ঠানিক আলোচনায় মিলিত হননি। এমনকি ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্ণিকাটের মাধ্যমে কেরির নিকট প্রত্যাশা করেও সংসদ নেতা রওশন এরশাদ ধানমন্ডির ইনকে সেন্টারে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে দু কথা বলার সুযোগ পাননি। যা একটি দেশের বিরোধী দলের নেতার চেয়ে দেশের ভাবমূর্তির প্রশ্নও জড়িত। যদিও সাবেক প্রধানমন্ত্রী, বিএনপির চেয়ারপারসন ও দেশনেত্রী ও মাঠের বিরোধী দল নেত্রী হিসেবে বেগম খালেদা জিয়ার সাথে ঢাকাস্থ মার্কিন দুতাবাসে কেরি দীর্ঘ সময় আলোচনা করেন। বর্তমানে দেশের রাজনীতি যে অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে তাতে রাজনীতিতে তৃতীয় ধারার প্রয়োজনীয়তা চোখে পড়লেও অংকুরেই আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় মহাজোট ও বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটে মিশে গিয়ে তৃতীয় ধারার অস্থিত্ব খুব একটা দৃশ্যমান হয়না। তারপরও রাজনীতিতে তৃতীয় ধারার প্রয়োজনীয়তাকে কোন মতেই উড়িয়ে দেয়া যায়না। বর্তমান সংসদে বিরোধীদলের যে ধারা তা জি হুজুর মার্কা বিরোধী দল বা প্রেজেণ্ট স্যার বলে পরিচিত। অর্থাৎ সংসদে বর্তমান বিরোধী দলের অবস্থা হচ্ছে, যা হুকুম জাঁহাপনারই নামান্তর।

বাংলাদেশ ও পাক ভারতের সমসাময়িক রাজনীতির দিকে তাকালে দেখা যায়, বাংলাদেশে যেমন শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বেগম জিয়ার নেতৃত্বাধীন দুই ধারার রাজনীতি বিদ্যমান, তেমনি ভারতে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি, সোনিয়া গান্ধীর নেতৃত্বে কংগ্রেস এবং পাকিস্তানে নেওয়াজ শরীফের নেতৃত্বাধীন মুসলীম লীগ এবং বিলাওয়াল ভুট্টোর নেতৃত্বে পাকিস্তান পিপলস পার্টির দুই ধারায় রাজনীতি বিদ্যমান। এই সমীকরণের বাহিরে বাংলাদেশ,   পাকিস্তান ও ভারতে তৃতীয় ধারার কোন বলিষ্ট রাজনীতির উচ্ছাস দৃষ্টিতে পড়েনি।

গণতান্ত্রিক রাজনীতি ও গণতন্ত্রের বিকাশে দুই ধারার পর তৃতীয় ধারার রাজনীতির প্রয়োজনীয়তা দেশ, জাতি ও জনগণের জন্য সমধিক প্রয়োজন বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করে থাকে। বলা চলে, বাংলাদেশের সংসদে যে বিরোধী দল এই মুহুর্তে যদি রাজপথের বা মাঠের বিরোধীদল হিসেবে বিএনপির না থাকতো, তবে দেশে বিরোধী দল বলতে কিছু অবশিষ্ট থাকত না। বরং সরকারকে প্রকারন্তরালে একদলীয় ও একক সরকার বলেই ধরে নেয়া হত। তাই যে কোন দেশে দুই ধারার রাজনীতির পর তৃতীয় ধারাকে রাজনীতির ব্যালেন্স রক্ষায় অর্গান হিসেবে মনে করা হয়ে থাকে।

দুই ধারার রাজনীতির পর তৃতীয় ধারায় সমীকরণে যাহাই বেড়িয়ে আসুক, তৃতীয় ধারায় রাজনীতিকেও খাটো করে দেখার সুযোগ গণতন্ত্রে অনুপস্থিত। তৃতীয় ধারার রাজনীতি হোক রাতের আধাঁরে  সমঝোতা বিহীন জাতীয় স্বার্থ সংরক্ষণ, দেশপ্রেম, জাতীয়তাবোধ, জনগণের কাংখিত আশার প্রতিফলন ও গণতন্ত্রের উত্তরন।

(এ.কে.এম শামছুল হক রেনু)
লেখক কলামিষ্ট
মোবাইল: ০১৭১৮-৮১৪৮১৩।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

প্রধান সম্পাদক
মফিজুল ইসলাম চৌধুরী সাগর

© All rights reserved © 2021 Jee Bazaar |
Theme Customized BY WooHostBD