
নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্তমানকন্ঠ ডটকম, সৌদি আরব : হুন্ডি দেশের অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর এবং দন্ডনীয় অপরাধ, প্রবাস থেকে বিকাশে টাকা পাঠানোও হুন্ডি । সোনালী ব্যাংকসহ দেশীয় ব্যাংকে একাউন্ট খুলে প্রবাসীদের কষ্টার্জিত টাকা ব্যাংকের একাউন্টে প্রেরণ করে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে শরীক হওয়ার আহবানের মধ্য দিয়ে রিয়াদে অনুষ্ঠিত হল “রেমিটারস কনফারেন্স” ।
২৬ নভেম্বর শনিবার রাতে শেরাটন হোটেলে বাংলাদেশ দূতাবাস এবং সোনালী ব্যাংক প্রতিনিধি অফিস কর্তৃক আয়োজিত “রেমিটারস কনফারেন্স” সভাপতিত্ব করেন, রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ । সোনালী ব্যাংকের এজিএম আব্দুল ওয়াহাবের সঞ্চালনায় কন্ফারেন্সে রেমিট্যান্স বিষয়ক আলোচনা করেন, দূতাবাসের উপ-মিশন প্রধান ড. মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, ডিফেন্স এ্যাটাশে ফারুক উল হক, কার্য্যালয় প্রধান মনিরুল ইসলাম, ইকোনমিক কাউন্সেলর ড. মোহাম্মদ আবুল হাসান ও শ্রম কাউন্সেলর সারোয়ার আলম । কমিউনিটির পক্ষ থেকে আলোচনায় অংশ নেন, পদক প্রাপ্ত রেমিটারস জেড ইউ সাইদ, হাবিবুর রহমান, ডাঃ জাকিউল হাসান, আবুল বাশার নুরুজ্জামান, জাকির হোসেন, গোলাম মহীউদ্দীন, এম আর মাহবুব, জিয়াউদ্দীন, এম এ জলিল ও ইউসূফ খান।
মোহাম্মদ মুস্তাইন বিল্লাহ সিরাজীর পবিত্র কোরআন তেলোয়াতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়ে দূতাবাসের কর্মকর্তা এবং সোনালী ব্যাংক প্রতিনিধি প্রবাসীদের বৈধ চ্যানেলে রেমিটেন্স প্রেরনের আহবান জানিয়ে বলেন, অবৈধভাবে রেমিটেন্স পাঠালে আয়ের হিসাব মিলবে না, ফলে জাতীয় রাজস্ব র্বোড এবং দুদকের মামলার ভয় থাকে । ব্যাংকিং চ্যানেলে অর্থ প্রেরণ করে মামলার ভয় মুক্ত থাকা যায়। বৈধ চ্যানেলে অর্থ প্রেরণে যেকোন সহযোগিতার জন্য দূতাবাস এবং সোনালী ব্যাংক প্রতিনিধি অফিসে প্রবাসীদের যোগাযোগের আহবান জানান হয় ।
রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ জানান, সোনালী ব্যাংকসহ আরো একটি বাংলাদেশী ব্যাংক সৌদি আরবে তাদের শাখা খোলার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিয়েছেন । সৌদি কর্তৃপক্ষের চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত পেলেই দ্রুত বাস্তবায়ন সম্ভব হবে । প্রবাসীদের অবসর ভাতার বিষয়ে তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে এই ব্যাপারে আবেদন করা হবে এবং হতে পারে সৌদি আরবের প্রবাসীদের দিয়েই প্রবাসী অবসর ভাতার কার্য্যক্রম শুরু হবে । তিনি আরো বলেন, বিগত সরকার গুলোর চেয়ে বর্তমান সরকারের সাথে সৌদি আরবের সর্ম্পক সবচেয়ে ভালো পর্যায়ে । সৌদি আরবে অদক্ষ শ্রমিকদের প্রশিক্ষন দিয়ে দক্ষ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি প্রশিক্ষন কেন্দ্রেরও অর্থ বরাদ্ধ দিয়ে রেখেছেন । যা বাস্তবায়নের কাজ শীঘ্রই শুরু হবে।
কমিউনিটি নেতৃবৃন্দুর মধ্যে এম আর মাহবুব বলেন, প্রবাসী রেমিটেন্স যোদ্ধারা সারা জীবন পরিশ্রম করে বিদেশ থেকে অর্থ পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতির চাকা গতিশীল রাখলেও বয়সের ভারে যখন তারা ন্যুজ হন, তখন তাদের অবসর ভাতার কোন ব্যবস্হা থাকেনা । তাই প্রবাসীদের অবসর ভাতার ব্যবস্হা করতে হবে । তিনি আরো বলেন, দেশের সকল শ্রেনীর চাকুরীজীবিদের অবসর ভাতার ব্যবস্হা থাকলেও প্রবাসীদের থাকবেনা কেন ?
এম এ জলিল বলেন, দূতাবাস চাইলে হুন্ডি এবং বিকাশ ব্যবসায়িদের তালিকা করে ব্যবস্হা নিতে পারেন ।
জিয়াউদ্দীন বলেন, বিকাশের বিকল্প খুঁজে বের করতে হবে । তাহলেই বিকাশ বন্ধ হবে ।
গোলাম মহীউদ্দীন বলেন, হুন্ডি বিকাশ বন্ধ করতে হলে, বৈধ উপায়ে অর্থ প্রেরণের মাধ্যমগুলোকে প্রচার প্রচারনা বাড়াতে হবে ।
জাকির হোসেন বলেন, দেশীয় ব্যাংকের মাধ্যমে অর্থ প্রেরণ করা গেলে, হুন্ডি বিকাশ রুখে দেওয়া সম্ভব হবে ।
আবার অনেকেই বৈধ পথে অর্থ প্রেরণ সহজিকরনের দাবি জানিয়ে বলেন, আমরা চাইলেই বেশী অংকের টাকা পাঠাতে পারিনা । তাই বৈধ পথে অর্থ প্রেরণ সহজ করতে হবে ।
আলোচনা সভা শেষে চলতি বছর প্রবাসীদের মধ্যে সর্বোচ্চ রেমিটেন্স প্রেরণকারী, বাংলাদেশ অর্থ মন্ত্রনালয় ও প্রবাসী কল্যান মন্ত্রনালয় থেকে সিআইপি মর্যাদাপ্রাপ্ত সৌদি প্রবাসী বাংলাদেশী ব্যবসায়ী জেড ইউ সাইদকে দূতাবাস এবং সোনালী ব্যাংকের পক্ষ থেকে বিশেষ সম্মাননা ক্রেষ্ট ও সনদপত্র দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, বৈধ পথে রেমিটেন্স প্রেরণে প্রবাসীদের উৎসাহ দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ দূতাবাস এবং সোনালী ব্যাংক প্রতিনিধি অফিস এমাসেই পবিত্র মদিনায় এবং আল কাছিম বুরাইদায় আরো দুটি রেমির্টাস কনফারেন্সের আয়োজন করেছিল ।