1. khandakarshahin@gmail.com : bangla :
  2. cmi.sagor@gmail.aom : cmi Sagor : cmi Sagor
মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১:০০ পূর্বাহ্ন
বর্তমানকণ্ঠ :-
Welcome To Our Website...



টাঙ্গাইলে ডিবি পুলিশের নির্যাতনের অভিযোগ: ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে আদায় করা হয়েছে স্বীকারোক্তি

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ৩ অক্টোবর, ২০১৬
  • ১৮০ Time View

65412নিউজ ডেস্ক,বর্তমানকণ্ঠ ডটকম: টাঙ্গাইল ডিবি পুলিশের অমানবিক নির্যাতনের শিকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আনিসুল ইসলাম রাজা ও মোহাম্মদ আলীর পরিবার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিচার দাবি করেছেন।

পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়ার জন্য সিলিং ফ্যানে ঝুলিয়ে অমানুষিক নির্যাতন করা হয়েছে। কালেমা পড়িয়ে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে আদায় করা হয়েছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি। তাছাড়া ডিবি পুলিশের মোটা অংকের টাকার দাবি মেটাতে না পারায় তারা নির্দোষ রাজা ও মোহাম্মদ আলীকে ফারুক হত্যার মিথ্যা মামলায় জড়িয়েছে।

রোববার বিকালে রাজা ও মোহাম্মদ আলীর মা এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা নিজ বাসায় বিভিন্ন মিডিয়ার সাংবাদিকদের ডেকে এ ফরিয়াদ জানান।

শহরের কলেজপাড়ার মৃত মোতালেব মিয়ার স্ত্রী ও আটককৃত আসামি আনিসুল ইসলাম রাজার মা বৃদ্ধা হালিমা বেগম জানান, আমার ছেলে রাজা কোনো সংগঠনের নেতা বা কর্মী ছিল না। সে ছিল একজন এনজিও কর্মী। দয়াল বাবা ভাণ্ডারী নামে পরিচালিত এনজিওর মাধ্যমে সে সমাজের হতদরিদ্র ও নিরীহ পরিবারের মাঝে কিস্তিতে চাল বিতরণ করত। এই এনজিওর চাকরির মাধ্যমেই খুব সাধারণভাবে চলত আমাদের পরিবার।

পরিবারের ইচ্ছায় ২০১৩ সালের শেষের দিকে রিয়া আক্তার নামে এক মেয়েকে বিয়ে করে সংসার জীবনও শুরু করে সে। ২০১৪ সালের ২৭ আগস্ট আকস্মিকভাবে জানতে পারি আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক আহমদ হত্যা মামলায় জড়িত সন্দেহে আমার ছেলে আনিসুল ইসলাম রাজাকে আটক করেছে ডিবি পুলিশ। ফারুক ভাইয়ের সঙ্গে আমাদের পরিবারের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। তার হত্যাকাণ্ডে আমার ছেলে জড়িত থাকবে এটা আমি বিশ্বাস করি না। এ কথা বলেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে রাজার মা অভিযোগ করেন, আমার ছেলেকে ১৫ দিন রিমান্ডে রেখে অমানুষিক নির্যাতন চালায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের এসআই অশোক কুমার সিংহ। টাঙ্গাইল কারাগারে ছেলেকে দেখতে গেলে রাজা কান্নায় ভেঙে পড়ে তার ওপর নির্যাতন ও ক্রসফায়ারে দেয়ার ভয় দেখানোর বর্ণনা দেয়।

রাজা জানায়, আটকের পর টানা ১৫ দিন ডিবি পুলিশ তার ওপর নির্মম নির্যাতন চালায়। ফারুক হত্যা মামলায় এমপি রানাসহ তার ভাইদের জড়ানোর কথা স্বীকার করতে বলে। পুলিশ পরিবারের কাছে মোটা অংকের টাকাও দাবি করে। তাদের টাকার দাবি মেটাতে না পারায় ১৫ দিন রাতে সিলিং ফ্যানে ঝুলিয়ে নাকে মুখে গরম পানি ঢেলে নির্যাতন চালায়। তারা অজু করিয়ে ও চোখ মুখ বেঁধে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে দরুদ শরিফ পড়িয়ে ক্রসফায়ারে দেবে বলেও হুমকি দেয়। এ অবস্থায় প্রাণে বেঁচে থাকার জন্যই রাজা ডিবি পুলিশের শেখানো কথামতো এমপি রানা ও তার ভাইরা এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত বলে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে বাধ্য হয়। ডিবি পুলিশের এ অন্যায় অত্যাচারের বিচার দাবি করেছেন রাজার মা হালিমা বেগম ও স্ত্রী রিয়া আক্তার।

এ মামলায় কারারুদ্ধ টাঙ্গাইল পৌর এলাকার ৬নং ওয়ার্ডে দক্ষিণ কলেজপাড়ার মোহাম্মদ আলীর স্ত্রী মোছাম্মৎ সাহিদা বেগম জানান, তার স্বামী মোহাম্মদ আলী ছিলেন একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। তিনি এলাকায় স্যাটেলাইট ক্যাবলের (ডিস লাইন) ব্যবসা করত। সে স্বর্ণা আক্তার (৯) ও রূপালী আক্তার (৪) নামের দুই কন্যা সন্তানের বাবা।

সাহিদা বেগম জানান, ২০১৪ সালের ৫ সেপ্টেম্বর টাঙ্গাইল ডিবি পুলিশের একটি দল ফারুক আহমদ হত্যা মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তার স্বামী মোহাম্মদ আলীকে আটক করে নিয়ে যায়। রিমান্ডের নামে টানা ১৫ দিন ডিবি পুলিশ তার ওপর নির্মম নির্যাতন চালায়। তাকে সিলিং ফ্যানে ঝুলিয়ে নাকে মুখে গরম পানি ঢেলে অমানুষিক অত্যাচার করে ফারুক হত্যা মামলায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করতে বলে। চোখ মুখ বেঁধে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে কালেমা পড়িয়ে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে বাধ্য করে বলেও তিনি দাবি করেন।

জেলখানায় স্বামীকে দেখতে গেলে কান্নায় ভেঙে পড়ে এ তথ্য জানিয়েছে মোহাম্মদ আলী। সে ডিবি পুলিশের নির্যাতনের ক্ষতচিহ্নও দেখায়। ডিবি পুলিশের এ অন্যায়ের বিচার দাবি করেছেন মোহাম্মদ আলীর স্ত্রী মোছাম্মৎ সাহিদা বেগম। স্বামীর অবর্তমানে দুই কন্যাকে নিয়ে সংসার চালাতে পারছেন না তিনি। বাবাকে ফিরে পেতে দু’সন্তানও সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে। স্বামীর সুবিচারে সাংবাদিকসহ দেশের বিবেকবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন সাহিদা বেগম।

২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি রাতে টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমদের গুলিবিদ্ধ লাশ তার কলেজপাড়া এলাকার বাসার সামনে থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় তার স্বামী মোহাম্মদ আলী বাসায় মেয়েদের লেখাপড়া দেখছিল। এ সংবাদ পেয়ে তার স্বামী দ্রুত ছুটে যান হাসপাতালে। এরপর রাতেই মন খারাপ নিয়ে বাসায় ফিরে আসেন তিনি। পরিবার-পরিজন নিয়ে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক চলাফেরা ও ব্যবসা-বাণিজ্য চালাতে থাকেন তিনি।

ঘটনার এতদিন পর সাংবাদিকদের ডেকে আজ কেন ডিবি পুলিশের বিরুদ্ধে এ ধরনের গুরুতর অভিযোগ করছেন- এ প্রশ্নের জবাবে রাজার মা হালিমা বেগম ও মোহাম্মদ আলীর স্ত্রী সাহিদা বেগম বলেন, এতদিন পুলিশের ভয়ে কথা বলতে পারিনি। এখন বেঁচে থাকার তাগিদে এবং সত্য উদঘাটনের জন্য জীবনের মায়া ত্যাগ করে এ অভিযোগ করতে বাধ্য হয়েছি। নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করে দেখুন এর পেছনে কারা কলকাঠি নাড়ছে আর কারা দায়ী।

তবে এ প্রসঙ্গে টাঙ্গাইলের ডিবি পুলিশের তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আশোক কুমার সিংহ বলেন, রাজা ও মোহাম্মদ আলীর পরিবারের দাবি সম্পূর্ণ মিথ্যা। তারা স্বেচ্ছায় ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দিয়ে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছে এবং ফারুক আহমদ হত্যা মামলায় কারা জড়িত তাও তারা বলেছে। এখন বিভ্রান্তি ছড়ানোর জন্য এবং ডিবি পুলিশকে বিতর্কিত করার জন্যই তারা নানা বানানো অভিযোগ করছে। তাদের কোনো দাবিই সঠিক নয়।

২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি রাতে টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমদের গুলিবিদ্ধ লাশ তার কলেজপাড়া এলাকার বাসার সামনে থেকে উদ্ধার করা হয়। ঘটনার তিন দিন পর নিহত ফারুক আহমদের স্ত্রী নাহার আহমদ বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে টাঙ্গাইল মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশকে। ডিবি পুলিশ রাজা ও মোহাম্মদ আলীকে গ্রেফতার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি আদায় করে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

প্রধান সম্পাদক
মফিজুল ইসলাম চৌধুরী সাগর

© All rights reserved © 2021 Jee Bazaar |
Theme Customized BY WooHostBD