স্পোর্টস ডেস্ক,বর্তমানকণ্ঠ ডটকম: দেশের মাটিতে টানা সপ্তম সিরিজ জেতা হলো না মাশরাফিদের। চট্টগ্রামে সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে ইংল্যান্ডের কাছে ৪ উইকেটে হেরেছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের দেয়া ২৭৮ রানের টার্গেট ৪ উইকেট ও ১৩ বল হাতে রেখে জিতে গেছে ইংল্যান্ড। ফলে ২-১ সিরিজ জিতে নিলো জস বাটলারের দল।
উদ্বোধনী জুটিতে দুই ওপেনার জেমস ভিন্স ও স্যাম বিলিংস তোলেন ৬৩ রান। ইংলিশ শিবিরে প্রথম আঘাত হানেন স্পিনার নাসির হোসেন। নিজের প্রথম ও ইনিংসের ১২তম ওভারের চতুর্থ বলে জেমস ভিন্সকে এলবিডব্লিউ করে ফেরান নাসির। আউট হওয়ার আগে ৩২ রান করেন ভিন্স।
ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটি করে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের করা ইনিংসের ২৫তম ওভারের তৃতীয় বলে ইমরুল কায়েসের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে ফেরেন স্যাম বিলিংস। আউট হওয়ার আগে ৬৯ বলে করেছেন ৬২ রান।
ইনিংসের ৩২তম ও নিজের ষষ্ঠ ওভারের দ্বিতীয় বলে জনি বেয়ারস্টোকে বোল্ড করে ফেরান শফিউল। আউট হওয়ার আগে ১৮ বলে ১৫ রান করেছেন তিনি। বেয়ারস্টোর পর বিপজ্জনক বেন ডাকেটকেও ফেরালেন শফিউল ইসলাম। ইনিংসের ৩৪তম ও নিজের ৭ম ওভারের দ্বিতীয় বলে মুশফিকের ক্যাচ বানিয়ে এই বাঁহাতিকে ফিরিয়েছেন শফিউল। আউট হওয়ার আগে ৬৩ রান করেন ডাকেট।
ইনিংসের ৪১তম ওভারের চতুর্থ বলে ইংলিশ অধিনায়ক জস বাটলারকে বোল্ড ফেরান মাশরাফি। আউট হওয়ার আগে ২৫ রান করেন তিনি। বাটলারকে বোল্ড করে ফেরানোর পর মঈন আলিকেও ফিরিয়েছেন টাইগার অধিনায়ক মাশরাফি। ইনিংসের ৪৩তম ওভারের তৃতীয় বলে রিয়াদের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে ১ রান করেছেন মঈন আলি।
তবে ৮ম উইকেট জুটিতে বেন স্টোকস (৪৭) ও ক্রিস ওকস (২৭) এর অপরাজিত ৪২ রানের জুটিতে ভর করে ১৩ বল ও ৪ উইকেট হাতে রেখে ম্যাচ জিতে নেয় ইংল্যান্ড।
বাংলাদেশের হয়ে অধিনায়ক মাশরাফি ও শফিউল ইসলাম ২টি করে উইকেট নেন। এছাড়া নাসির হোসেন ও মোসাদ্দেক হোসেন নেন ১টি করে উইকেট।
এরআগে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে মুশফিকুর রহিমের অর্ধশতকে ভর করে সফরকারি ইংল্যান্ডকে ২৭৮ রানের টার্গেট দিয়েছে বাংলাদেশ। নির্ধারিত ৫০ ওভারের ৬ উইকেট হারিয়ে ২৭৭ রান করে বাংলাদেশ।
আফগানিস্তান সিরিজে রান না পাওয়া মুশফিকএ ম্যাচে নিজেকে ফিরে পেয়েছেন।ক্যারিয়ারের ২৩তম ফিফটি তুলে নিয়েছেন মিস্টার ডিপেনডেবল। ৬২ বলে ৬৭ রান করে অপরাজিত ছিলেন মুশফিক। মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের (৩৮) সঙ্গে ৭ম উইকেট জুটিতে তার অবিচ্ছিন্ন ৮৫ রানের জুটির কল্যাণে ওই রান করতে সমর্থ হয় বাংলাদেশ।
ওপেনিং জুটিতে ৮০ রান করেন তামিম ইকবাল ও ইমরুল কায়েস। ইনিংসের শুরু থেকে সাবধানে খেলছিলেন দুই ব্যাটসম্যান। কিন্তু বেন স্টোকসের করা ইনিংসের ১৯তম ওভারের শেষ বলে সহজ ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ইমরুল। আউট হওয়ার আগে ৫৮ বলে করেন ৪৬ রান। ৪ চার ও ১ ছয়ে এ রান করেন তিনি।
কায়েস আউট হওয়ার পর প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে পাঁচ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করা বাঁহাতি ওপেনার তামিম ইকবাল আদিল রশিদের করা ইনিংসের ২৩তম ওভারের পঞ্চম বলে জেমস ভিন্সের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। আউট হওয়ার আগে তামিম ৬৮ বলে করেন ৪৫ রান। এর আগে ক্রিস ওকসের করা ইনিংসের ২২তম ওভারের পঞ্চম বলে চার মেরে পাঁচ হাজার রান পূর্ণ করেন তামিম।১৫৯ ম্যাচে ৩২.৪৬ গড়ে তামিমের রান এখন ৫০০৭।
তামিম ইকবালের পর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকেও ক্যাচ আউট করে ফিরিয়েছেন আদিল রশিদ। ইনিংসের ২৫তম ওভারের পঞ্চম বলে আউট হওয়ার আগে ৭ বলে ৬ রান করেন রিয়াদ। নার্ভাস ৪৯-এর শিকার হয়ে ফেরেন সাব্বির রহমান। দলীয় ১৭৬ রানে আদিল রশিদের করা ৩৩তম ওভারের পঞ্চম বলে উইকেট কিপার জস বাটলারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন সাব্বির। আউট হওয়ার আগে ৪৬ বলে ৫টি চারের সাহায্যে ৪৯ রান করেন তিনি।
দলীয় ১৮৪ রানের মাথায় মঈন আলির করা ৩৬তম ওভারের প্রথম বলে স্টাম্পিং হয়ে ফেরেন সাকিব আল হাসান। আউট হওয়ার আগে করেন ১০ বলে ৪ রান। এরপর নাসির হোসেন আদিল রশিদের চতুর্থ শিকারে পরিণত হলে চাপে পড়ে বাংলাদেশ। ইনিংসের ৩৯তম ওভারের প্রথম বলে ভিন্সের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে ৪ রান করেছেন তিনি।
তবে সপ্তম উইকেট জুটিতে মুশফিকুর রহিম ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের অবিচ্ছিন্ন ৮৫ রানের জুটিতে বিপর্যয় সামাল দিয়ে ভালো সংগ্রহ দাঁড় করায় বাংলাদেশ।
ইংলিশ বোলারদের হয়ে আদিল রশিদ একাই নেন ৪ উইকেট। এছাড়া বেন স্টোকস ও মঈন আলি নেন ১টি করে উইকেট।
তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজটি ১-১ এ সমতা বিরাজ করছে। তাই এ ম্যাচে যারা জিতবে সিরিজ জয়ের ট্রফি উঠবে তাদের হাতে। বাংলাদেশ এ ম্যাচে জিতলে ঘরের মাঠে টানা সপ্তম সিরিজ জয় হবে টাইগারদের।