যুক্তরাষ্ট্র,বর্তমানকণ্ঠ ডটকম: মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ‘আন্তর্জাতিক সাহসী নারী পুরস্কার’ (ইন্টারন্যাশনাল উইমেন অব কারেজ অ্যাওয়ার্ড) পেয়েছে বাল্য বিবাহের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো বাংলাদেশি কিশোরী শারমিন আক্তার। যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় বুধবার সকালে মার্কিন ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প ও পররাষ্ট্র দপ্তরের রাজনীতি বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি থমাস শ্যাননের হাত থেকে এ পুরস্কার গ্রহণ করেন শারমিন আক্তার।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মোট ১৩ নারীকে এ বছর সম্মাননা দেওয়া হয়েছে। শারমিন আক্তারের পুরস্কার গ্রহণের বিষয়ে গতকাল ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, মাত্র ১৫ বছর বয়সে বিবাহ দেওয়ার ব্যাপারে তার পরিবারের চেষ্টার বিরুদ্ধে সাহসিকতার সঙ্গে রুখে দাঁড়ান শারমিন আক্তার। অব্যাহত রাখেন লেখাপড়া। যা শারমিনের মতো একই রকম চাপের সম্মুখীন দক্ষিণ এশিয়ার কিশোরী মেয়েদের জন্য একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
নিজের চেয়ে অনেক বেশি বয়সের একজনকে বিবাহ করতে অস্বীকার করে শারমিন অসাধারণ সাহস ও আত্ম-বিশ্বাসের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন। শারমিন নারী ও মেয়েদের কাছ থেকে সচরাচর প্রত্যাশিত নিরবতা ভাঙার সাহস দেখিয়েছেন, নিজের অধিকার রক্ষায় লড়াই করেছেন এবং শেষ পর্যন্ত তার মা ও হবু বরকে আইনের আওতায় এনেছেন।
সাহসিকতার জন্য প্রশংসিত শারমিন বর্তমানে ঝালকাঠির রাজাপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। সমাজের ক্ষতিকর প্রথা বাল্য বিবাহ ও জোরপূর্বক বিবাহর বিরুদ্ধে প্রচারণা চালাতে তিনি ভবিষ্যতে একজন আইনজীবী হওয়ার স্বপ্ন দেখেন। বিশ্বের যেসব দেশে বাল্য বিবাহের হার বেশি বাংলাদেশ তার মধ্যে অন্যতম। বাল্য বিবাহর এই ধারা লাখ লাখ মেয়ের স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা ও শিক্ষার অধিকারকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে যা দেশের উন্নতিকে বাধাগ্রস্ত করে।
যারা ব্যক্তিগত ঝুঁকি সত্ত্বেও শান্তি, ন্যায় বিচার, মানবাধিকার, নারী-পুরুষের সমতা এবং নারীর ক্ষমতায়নে অবদান রেখেছেন, তাদের অসাধারণ সাহসিকতা ও নেতৃত্বের স্বীকৃতি দিতে প্রতিবছর এই পুরস্কার দিয়ে থাকে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর। ২০০৭ সালে শুরু হওয়া এই পুরস্কারের মাধ্যমে পররাষ্ট্র দফতর এ পর্যন্ত বিশ্বের ৬০টি দেশ থেকে শতাধিক নারীকে স্বীকৃতি দিয়েছে।