হাকিকুল ইসলাম খোকন,নিউইয়র্ক,বর্তমানকণ্ঠ ডটকম: যুক্তরাষ্ট্রের আইন প্রেণতা থেকে শুরু করে প্রবাসীদের প্রত্যাশার মধ্যে দিয়ে প্রথম আলো আটলান্টিক পাড়ি দিয়ে যাত্রা শুরু করেছে ২৬ মার্চ রোববার। যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসের প্রভাবশালী সদস্য গ্রেস ম্যাং বলেছেন, ক্যাপিটাল হিল থেকে বাংলাদেশকে সব সময় গুরুত্ব দেয়া হয়। বর্তমান বাস্তবতায় বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের জন্য আরো গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠেছে।প্রথম আলো উত্তর আমেরিকা ছাপা সংস্করনের উদ্বোধন করতে গিয়ে ট্রান্সকম গ্রুপ এবং মিডিয়াস্টারের চেয়ারম্যান ও সিইও লতিফুর রহমান বলেছেন, আজ আমাদের জন্য এক ঐতিহাসিক দিন। বাংলাদেশের প্রথম কোন পত্রিকা নিউইয়র্ক থেকে ছাপা হয়ে পাঠকদের কাছে পৌঁছবে। এটি প্রথম আলোর জন্য আনন্দের বিষয় তেমনি বাংলাভাসীদের কাছেও গর্বের।
বাংলাদেশে স্বাধীনতা দিবসের দিনে প্রথম আলো নর্থ আমেরিকা যাত্রা শুরু অনুষ্ঠানে গ্রেস ম্যাং এবং লতিফুর রহমান এসব কথা বলেছেন। প্রথম আলো যাত্রা শুরুর এ ঐতিহাসিক আয়োজন বসেছিল নিউইয়র্কের ইর্য়ক কলেজ অডিটরিয়ামে। যাত্রা শুরুর দিনই পাঠকেদর জন্য হাজির হয়েছে কাগজে ছাপা প্রথম আলো। দূয়ার খোলে দিয়েছে যা কিছু ভালো তার সঙ্গে চলার। এই পথ চলার ঘোষনা অনুষ্ঠানে নিউইয়র্কে বসেছিল বাংলা ভাষাবাসীদের মিলন মেলা। সব মত আর পথ ভুলে ইয়র্ক কলেজ অডিটোরিয়ামে জড়ো হয়েছিলেন শত শত মানুষ। প্রথম আলোর প্রতি ভালোবাস আর চোখে মুখে উচ্ছাস নিয়ে এসেছিল আমেরিকায় বেড়ে উঠা তরুণ প্রজন্ম, মধ্য বয়সী নারী, পুরুষ আর সিনিয়র সিটেজেনরা। আকাশ আর সড়ক পথে বিভিন্ন রাজ্য থেকেও এসেছিলেন প্রথম আলোর অনুষ্ঠানে যোগ দিতে। অনুষ্ঠানকে ঘিরে ইয়র্ক কলেজ অডিটোরিয়ামকে সাজানো হয়েছিল নববধুুর সাজে। সন্ধ্যার পর পরই দলে দলে লোকজন আসতে থাকে অনুষ্ঠানে। কয়েক ঘন্টার মধ্যে প্রায় পনেরোশ দর্শক আসনের ইয়র্ক কলেজ অডিটোরিয়াম পূর্ন হতে শুরু করে। দৃষ্টি নন্দন লাইটিং আর এলইডির আলো ঝলকানি, গান আর নাচে মুগ্ধ হন দর্শক শ্রোতারা। বক্তব্য আর সাংস্কৃতিক পর্বে প্রাধান্য পায় বাংলাদেশ আর বাংলাদেশ। প্রথম আলোর উদ্বোধনের সময় বাংলাদেশ আর প্রথম আলোর পতাকায় সৃষ্টি হয় এক অন্য রকম আবহের। লাল সবুজের পতাকা হাতে দর্শকদের দেখে অনেকেই মন্তব্য করেছেন এ আরেক বাংলাদেশ। সন্ধ্যা গড়ালেই যাত্রা শুরু অনুুুষ্ঠানের প্রারম্ভিকতা। বাংলাদেশ এবং আমেরিকার জাতীয় সংগীত দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান। এর পর প্রথম আলো নির্মিত প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শিত হয়।
এ পর্বের উপস্থাপনা করেন নিম্মি নাহার। পরে প্রথম আলোর উত্তর আমেরিকার থিম সং নিয়ে মঞ্চে আসে বিপা। বিপার শিশু শিল্পীরা থিম স্যং এর সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করে। স্বাগত বক্তব্য রাখেন নর্দাণ লাইটস মিডিয়ার সিইও সাইফুল সিদ্দিক। তিনি বলেন, এতদিন প্রথম আলো দেশের কথা বলেছে এখন থেকে প্রবাসীদের কথাও সমানভাবে উচ্চারিত। প্রথম আলোর উত্তর আমেরিকায় সঙ্গে নিজেকে সম্পৃক্ত রাখার ক্ষেত্রে নিজে সম্পৃক্ত থাকায় সন্তোষ প্রকাশ করেন।
বক্তব্য রাখেন প্রথম আলোর বিশেষ প্রতিনিধি হাসান ফেরদৌস। এ পর্ব উপস্থাপনা করেন টনি ডায়েস। পরে মঞ্চে আসেন প্রথম আলোর সহেযাগি সম্পাদক আনিসুল হক। তিনি প্রথম আলো নিয়ে ধারনা দেন। এ সময় গর্বিত প্রজন্ম ফারাজ হোসনকে নিয়ে প্রদর্শিত হয় একটি প্রামাণ্য চিত্র। এটি প্রদর্শনের সময় হলভর্তি দর্শকদের মাঝে পিন পতন শব্দ ছিল না। হলের নিয়ন আলো নেভানোর পর সৃষ্টি অন্ধকার যে ফারাজের শোকে আরো বেশি ঘাড় হয়ে উঠে। মঞ্চে আমন্ত্রন জানানো হয় ফারাজের মা স্কাইফ ফার্মাসিটিক্যালের
ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী সিমিন হোসেন এবং নানা ট্রান্সকম গ্রপ এবং
মিডিয়া স্টার লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও সিইও লতিফুর রহমানকে। এ সময় বাংলাদেশি আমেরিকান তরুণ প্রজন্ম ফারাজের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানিয়ে বলেন, ফারাজের মা আমাদের সহস্রাব্দ প্রজন্মের গর্বিত মা। আসুন আমরা তাকে সালাম জানাই। এসময় সবাই দাঁড়িয়ে ফারাজে মাকে সম্মান প্রদর্শন করেন। পরে সিমিন হোসেন এবং লতিফুর রহমানের হাতে নর্দাণ লাইটস মিডিয়ার সিইও সাইফুল সিদ্দিক এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট ইকবাল আনোয়ার সম্মাননা তুলে দেন। এসময় আনিসুল হককে হাতেও দেয়া হয় সম্মাননা। এর পর বক্তব্য রাখেন ট্রান্সকম গ্রপ এবং
মিডিয়া স্টার লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও সিইও লতিফুর রহমান। এর আগে তিনি প্রথম আলো উত্তর আমেরিকা ছাপা সংস্করণের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। এসময় অডিটোরিয়ামজুড়ে চলে মুহুমুহ করতালি। স্কীনে ভেসে উঠে যাত্রা শুরু হওয়া প্রথম আলোর ছাপা সংস্করণের। বেজে উঠে প্রথম আলো উত্তর আমেরিকার থিম সং। সবাই দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ এবং প্রথম আলোর পতাকা নেড়ে উৎসব উদযাপন করে। একে একে মঞ্চে আসেন আমেরিকার মূল ধারা রাজনীতিকরা। বক্তব্য শেষে তাদের হাতে তুলে দেয়া হয় সম্মাননা। এ পর্ব পরিচালনা করেন আশরাফুল হাসান। এর পর মঞ্চে আসে নিউজার্সির সৃষ্টি একাডেমি অব পারফর্মিং। পরে আবারো মঞ্চে আসে বিপা। তারা গানের সঙ্গে নৃত্য পরিবশেন করে। এর আগে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, প্রথম আলোর এ যাত্রা প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য একটি ইতিবাচক দিক। তিনি প্রথম আলো উত্তর আমেরিকার সমৃদ্ধি কামনা করেন।
আলোচনা এবং নৃতের পর মঞ্চে আসেন বিশিষ্ট রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুর বন্যা। হলভর্তি দর্শক রবীন্দ্র সঙ্গীতের মন্ত্রে মুগ্ধ হন। মঞ্চে আসেন সেলিম চৌধুরী । অনুষ্ঠিত হয় র্যাফেল ড্র। র্যাফেল ড্র পরিচালনা করেন প্রথম আলো উত্তর আমেরিকা টিমের, ইব্রাহীম চৌধুরী শাহাব উদ্দিন সাগর, নিম্মি নাহার । সর্বশেষ মঞ্চে আসে ফুয়াদ। তার দলে ছিলেন পূণম এবং কৃষা তিথি। অনুষ্ঠানে নিউইয়র্ক ঢাকা নিউইয়র্ক বিমান টিকেট পান মনির হোসাইন। অন্য ৯ টি পুরস্কারও পান ভাগ্যবানরা। অনুষ্ঠানে সবাইকে কৃতজ্ঞতা জানান প্রথম আলো উত্তর আমেরিকার ইব্রাহীম চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে ঝকঝকে ছাপার প্রথম আলো তুলে দেয়া
প্রতি শুক্রবার নিউইয়র্কসহ আশপাশের অঙ্গরাজ্যগুলোতে পাওয়া যাবে প্রথম আলো উত্তর আমেরিকার ছাপা সংস্করণ। গ্রাহক হওয়ার জন্য যোগাযোগ করতে হবে প্রথম আলো উত্তর আমেরিকা অফিস, ১৫০-৪৭ হিলসাইড এভিনিউ , জ্যামাইকা, নিউইয়র্ক ১১৪৩২ ফোন ৭১৮৩৬২৮২২৩ অথবা info@prothomalona.com
ছবি: palo york , plo york 2 ক্যাপশন:
নিউইয়র্কের ইয়র্ক কলেজ অডিটোরিয়ামে ফিতা কেটে প্রথম আলো উত্তর আমেরিকার যাত্রা শুরু করছেন ট্রান্সকম গ্রুপ এবং মিডিয়া স্টারের চেয়ারম্যান ও সিইও লতিফুর রহমান।