শেখ এহছানুল হক খোকন, বর্তমানকন্ঠ ডটকম, কুয়েত : ৯৩ জন বাংলাদেশী শ্রমিক বিগত কয়েক মাস ধরে কর্মহীন অবস্হায় দিনাতিপাত করছিলেন । বৈধ ভিসা নিয়ে কুয়েতে আসেন ভাগ্যের অন্বেষনে। ছয় থেকে সাত লক্ষ টাকায় ভিসা কিনে কুয়েত আসেন আল তাওয়াফ নামে এক কোম্পানীতে । তারা জানতেন না ভাগ্য আকাশের খবর। কিন্তু কুয়েত এসে পড়ে যান অনিশ্চয়তার মধ্যে। দীর্ঘ নয় মাসেও যখন বৈধ্য ভিসা নিয়ে এসে অবৈধ হয়ে পড়লেন তখন সেখানে হতাশা আর অনিশ্চয়তা ছাড়া আর কিইবা থাকতে পারে। কুয়েতে শ্রম মন্ত্রনালয়ে অভিযোগ করেন তারা, সেখানে কোন কুল কিনারা না পেয়ে অবশেষে সেখান হতে ছুটে আসেন কুয়েতস্হ বাংলাদেশ দূতাবাসে। দূতাবাসের শ্রম কাউন্সিলর তাদের সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন।
ঈদের ছুটি ছাটা শেষে যখন অফিস আদালত খুলে, ঠিক তখন আবার এ বিষয়ে ছুটে আসেন দূতাবাসে। অসহায় শ্রমিক জানেন না তাদের সমাধান কোথায় হবে কিভাবে হবে ? ২৬শে সেপ্টেম্বর দূতাবাসে আসেন এর আশু সমাধানের জন্য। এখানে একটি বিষয় স্পষ্ট যে এসকল শ্রমিকরা নিয়ম কানুন না জেনে শুধু দালাল দ্ধারা প্রতারিত, কারন একটি ভিসা পেতে হলে যারা নেপথ্যে থাকে তাদের লাভ এবং লোভ তো থাকবেই ।
যার ফলশ্রুতিতে সরকারীভাবে যে সকল নিয়ম কানুন রয়েছে তার দিকে দৃষ্টি না দিয়ে লেনদেন করে চলে আসেন কুয়েতে। মন্ত্রনালয় এর একটি বিশেষ নিয়ম রয়েছে ভিসা সংক্রান্ত, সেটি হচ্ছে যে দেশ হতে শ্রমিক ভিসা বের হয় সেখানের বাংলাদেশ দূতাবাস বা কাউন্সিলর ভবনের সত্যায়িত করা ষ্টাম্পিং অত্যন্ত জরুরী, কিন্তু লামানা বা বিশেষ অনুমতি সাপেক্ষে যে ভিসা বের হয় তার মধ্যে চুরি তো সিনাচুরি, সে খবর কে রাখে ? দূতাবাস থেকে ক্লিয়ারেন্স ষ্টাম্পিং না দিলেও দেশ হতে ঘুষ নিয়ে ক্লিয়ারেন্স দেওয়া হয়। তাই সচেতনতা বৃদ্ধি অত্যন্ত জরুরী। ৬০ দিনার বেতন ৭ লক্ষ টাকা ভিসা দিয়ে না বুজে আসার নাম বোকামী ছাড়া আর কিছুই নয় বলে এখানে পূর্বে আসা শ্রমিকদের মতামত। প্রবাস হতে দেশের সুনাম বা অগ্রগামী হওয়া যেমন দ্রুত, তেমনি ভাবমূর্তি নষ্ট করা ও সহজ। আর তা সম্ভব শুধু যারা দেশের সুনাম নয় নিজের স্বার্থই বড় চোখে দেখেন তাদের ক্ষেত্রে, এমন কথা ও বলছেন বেশির ভাগ প্রবাসীরা।
গনমাধ্যমের কর্মীরা দূতাবাসে গিয়ে শ্রম কাউন্সিলর এর কাছে এ সংক্রান্ত বিষয়ে জানতে চাইলে, তিনি জানান এই শ্রমিকদের বিষয়ে তাদের কোম্পানীতে যাওয়া হয় এবং তাদের আকামাসহ বিভিন্ন বিষয়ে চাপ দিলে কোম্পানী তাদের সমস্যা সমাধানের বিষয়ে আশ্বস্ত করেন ।
আল তাওয়াফ কোম্পনীর লাইসেন্স এর কিছু সমস্যার কারনে আকামা লাগছিলো না তবে বর্তমানে তাদের লাইসেন্স নবায়ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন । ইতি মধ্যে পাসর্পোট ও তাদেরকে হস্তান্তর করা হচ্ছে এবং খুব শীঘ্রই তাদের বৈধ্য হতে সকল ব্যবস্থা গ্রহন করবেন বলে শ্রম কাউন্সিলর আব্দুল লতিফ খান জানান। বিশেষ করে ভিসার ব্যবসা করতে গিয়ে যে সকল দালালরা শ্রমিকদের ভাগ্য নিয়ে খেলা করেন তাদের ব্যাপারে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবী জানান ভুক্তভোগী শ্রমিক ও কুয়েত প্রবাসী রেমিটেন্স যোদ্ধারা।