নিজস্ব প্রতিবেদক,বর্তমানকণ্ঠ ডটকম: এশিয়ান হাইওয়ে ও গভীর সমুদ্রবন্দর অর্থাৎ ডিপ-সি পোর্টের বাস্তবায়নের জন্য চীন ও বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
শনিবার (১৫ অক্টোবর) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলানায়তনে এক আলোচনা সভায় তিনি এ আহ্বান জানান।
‘চীনের প্রেসিডেন্টের বাংলাদেশ সফর ভূ-আঞ্চলিক রাজনীতির নতুন বার্তা’ শীর্ষক এ আলোচনার আয়োজন করে জাগপা। এতে সভাপতিত্ব করেন জাগপা সভাপতি শফিউল আলম প্রধান।
গ্লোবাল রাজনীতি বা অর্থনীতিতে কানেক্টিভিটিকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হয় উল্লেখ করে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘খালেদা জিয়ার সরকার থাকা অবস্থায় আকাশ পথে বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের কানেক্টিভিটি শুরু করেছিলাম। এখন এটা সম্প্রসারণ হয়েছে। আশা করি, এটা আরো সম্প্রসারণ হবে।’
তিনি বলেন, ‘এশিয়ান হাইওয়ে হওয়ার কথা আমাদের সরকার থাকাকালে প্রস্তাব ছিল। সেটা বাংলাদেশের উপর দিয়ে চট্রগ্রাম হয়ে কক্সবাজার থেকে মাত্র ৩৭ কিলোমিটার নতুন রাস্তা করলে মিয়ানমারের হাইওয়ের সঙ্গে যুক্ত করে থাইল্যান্ডের সঙ্গে সুযোগ স্থাপন করে পুরো এশিয়ার সঙ্গে কানেক্টিভিটি হয়ে যায়। আমরা কাজে অগ্রসর হয়েছিলাম। এবং আমরা পুরো রাস্তা করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছিলাম। কিন্তু সরকার থেকে চলে আসার কারণে সেটা বাস্তবায়ন হয়নি। আশা করি চীন এ ব্যাপারে ভূমিকা রাখবে। বাংলাদেশের সঙ্গে এই কানেক্টিভিটির জন্য তারা এ প্রস্তাব বাস্তাবায়ন করবে।’
এ বিষয়ে বর্তমান সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের বর্তমান সরকারের কাছেও প্রত্যাশা এশিয়ান হাইওয়ে বাস্তবায়ন করা। এই প্রস্তাব গ্রহণ করে চীনের সঙ্গে কানেক্টিভিটি বাস্তবায়নে রাস্তাটি করা।’
তিনি আরও বলেন, ‘আরেকটি রাস্তা আছে, আমাদের (বিএনপি সরকার) সরকারের প্রস্তাব ছিল একটি ডিপ-সি পোর্ট করার জন্য। চায়নাও এ ব্যাপারে সমর্থন দিয়েছিল। সেটা হলো সোনাদিয়া ডিপ-সি পোর্ট। এটা হলে চায়নাও সুফল পাবে। এর মাধ্যমে উভয় দেশের জনগণের স্বার্থ রক্ষা হবে। আশা করি এটা বস্তাবায়ন করে দুই দেশের জনগণের স্বার্থ রক্ষা করবে চীন।’
শি জিনপিং এর ঢাকা সফর প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘চীনের রাষ্ট্রপতির এ সফর গুরুত্বপূর্ণ এবং তাৎপর্যপূর্ণ। চীন প্রেসিডেন্ট এই বার্তা দিয়ে গেছেন বাংলাদেশের যে কোনো সংকটে তারা জনগণের পাশে আছে। জনগণের উন্নয়নে চীন পাশে থাকবে।’
চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তি সম্পর্কে বিএনপি নেতা বলেন, ‘জানতে পেরেছি দুই দেশের মধ্যে প্রায় ২৭টি চুক্তি হয়েছে। আশা করি, এইসব চুক্তি দু’দেশের স্বার্থ রক্ষা ও উন্নয়ন, স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষায় হবে। সেটারই বাস্তাবায়ন চাই।’
মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘চীন সব সময় বিশ্বাস করে জনগণের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক। চীন মনে করে সরকার আসে যায় তাই জনগণই তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ বন্ধু। চীন বাংলাদেশকে এই বার্তা দিলেন তারা জনগণের ইচ্ছা-আকাঙ্ক্ষার প্রতি গুরুত্ব দিতে চায়। চীনের রাষ্ট্রপতি বারবার বলেছেন দুই দেশের জনগণের সম্পর্ক জোরদার করতে চাই। উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশের পাশে থাকতে চাই।’
তিনি বলেন, ‘উপমহাদেশে নানা রকম অশান্তি ও ষড়যন্ত্রের পায়তারার চেষ্টা চলছে, সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের ভূ-রাজনীতির বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে জনগণের সঙ্গে সম্পর্কের উপর গুরুত্বারোপ করেছেন। তার এই সময় রাষ্ট্রীয়ভাবে সীমাবদ্ধ ছিল না।’
তিনি আরও বলেন, ‘রাষ্ট্রপতিরা দেশে আসলে সরকারপ্রধান, রাষ্ট্রপতি, বিরোধীদলের সঙ্গে সাক্ষাত করেন। তিনি পরিষ্কারভাবে এই মেসেজ দিয়ে গেলেন। যেহেতু বাংলাদেশের নির্বাচিত পার্লামেন্ট নয়, প্রকৃত জনগণের প্রতিনিধি বা বিরোধীদল নেই সেজন্য বিরোধীদলকে কোনো গুরুত্ব দিলেন না। জনগণের ১৬ কোটি মানুষের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে গুরুত্ব দিয়েছেন। এতে আমরা মনে করি, শি জিনপিং বাংলাদেশের জনগণের জন্য একটা বার্তা ও ঈশারা দিয়ে গেছেন।’
সভায় উপস্থিত ছিলেন- জাপপা সাধারণ সম্পাদক খন্দকার লুৎফর রহমানসহ দলটির অন্যান্যের নেতাকর্মীরা।