নিজস্ব প্রতিবেদক,বর্তমানকণ্ঠ ডটকম: নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের স্বার্থে সঠিক ব্যক্তিদের নিয়ে কমিশন গঠনের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন বিশিষ্টজনেরা।
তাদের মতে, নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ওপর মানুষের আস্তা কম। কমিশন পুনর্গঠনে রাজনৈতিক দলগুলোকে সঙ্গে নিয়ে আলোচনা করতে হবে।
শনিবার (১৫ অক্টোবর) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) আয়োজিত ‘নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন ও নাগরিক ভাবনা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এমন মত প্রকাশ করেন বিশিষ্টজনেরা।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহন না করা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ঐতিহাসিক ভূল সিদ্ধান্ত ছিল বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার এটি এম শামসুল হুদা।
বিএনপির উদ্দেশ্যে শামসুল হুদা বলেন, ‘আপনারা নির্বাচনে গেলেন না কেন? আমরা ইতি পূর্বে নির্বাচন করে দেখেছি প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলেরই বাংলাদেশের কোথাও না কোথাও নিজস্ব ভোট ব্যালেন্স রয়েছে সেখানে নির্বাচন কমিশন, এমনকি পুলিশ প্রশাসনও কোনো প্রভাব খাটাতে পারে না। তাদের দলবাজি বিশেষ দলের জনপ্রিয়তার কাছে হেরে যায়।
সব দলের মতামত নিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠনের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘শ্রীলঙ্কা সহ অনেক দেশেই রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনার মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়। যার ফলে সে সকল দেশে নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। আমাদের দেশেও যদি সব দলের মতামত নিয়ে গঠন করা হয় তখন নির্বাচন কমিশন নিয়ে কেউ কথা বলতে পারবে না।’
বাংলাদেশে নির্বাচনে সবচেয়ে বড় সমস্যার কথা উল্লেখ করে সাবেক এই প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘আমাদের দেশে নির্বাচনের সবচেয়ে বড় সমস্যা হল নির্বাচন কমিশনের উপর রাজনৈতিক দলগুলোর আস্থার চরম অভাব। যে দল ভোটের মাধ্যমে পরাজিত হয় তারা ফলাফল মেনে নিতে চায় না। এক্ষেত্রে আমাদেরকে আগে চিন্তা করতে হবে কি করে রাজনৈতিক দলগুলোর আস্থা ফিরিয়ে আনা যায়।’
এ সময় তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘আমি আশা করি আগামী নির্বাচনে বিএনপিসহ বড় রাজনৈতিক দলগুলো অংশ নিবে এবং নির্বাচন ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে।’
গোলটেবিল আলোচনায় সুজনের সভাপতি ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা হাফিজউদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘আসুন আমরা সবাই মিলেই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় কাজ করি। সেটি করতে না পারলে দেশে যেটুকু গণতন্ত্র আছে সেটুকুও হারিয়ে যাবে।’
সুজনের সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারবে না যদি না রাজনৈতিক দলগুলো এবং সরকার সহযোগিতা না করে।’
তিনি বলেন, ‘সুষ্ঠ নিরপেক্ষ নির্বাচন পরিচালনার জন্য একটি সঠিক প্রতিষ্ঠান আবশ্যক। অতীতে সঠিক পদ্ধতি ব্যবহার করে সঠিক ব্যক্তিদের নিয়োগ না দেওয়ার কারণে সংবিধান অনুযায়ী স্বাধীন হলেও অনেক ক্ষেত্রেই কমিশনের সদস্যরা স্বাধীনভাবে দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে।’
গোলটেবিল আলোচনা সভায় আরও অংশগ্রহণ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. আসিফ নজরুল, লেখক কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ, স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ তোফায়েল আহমেদ, সাবেক নির্বাচন কমিশনার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেন প্রমুখ।