নিজস্ব প্রতিবেদক,বর্তমানকণ্ঠ ডটকম: সুন্দরবন রক্ষায় দেশের সর্বস্তরের মানুষের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার পাশাপাশি এ আন্দোলনে বিজয়ী হওয়ার কোনো বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
সোমবার (১৭ অক্টোবর) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে বিজ্ঞান আন্দোলন মঞ্চ আয়োজিত ‘সুন্দরবনের উপর রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রভাব’ শীর্ষক বিশ্লেষণ ও বিশেষজ্ঞ মতামত সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মোহাম্মাদ বলেন, ‘রামপালে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আমরা যে আন্দোলন করছি, আমাদের সাথে রয়েছে দেশের সাধারণ মানুষের যুক্তি এবং শক্তি। সরকার কোনো দিক থেকে যুক্তি দেখাতে পারছে না, তাদের শুধু আছে একঘেয়েমিপনা। সুতরাং এটি রক্ষার আন্দোলনে আমাদের বিজয়ী হওয়ার কোনো বিকল্প নেই।’
আনু মোহাম্মাদ বলেন, ‘সরকার ও তার অনুসারীরা টাকা এবং স্বার্থের লোভে জ্ঞান-বুদ্ধি হারিয়ে ফেলেছে। এই প্রকল্পের পক্ষে তারা কোনো যুক্তি দেখাতে পারছে না। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য কোম্পানি ও সরকার একাকার হয়ে গেছে। তাদের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। তারা জনগণের স্বার্থ দেখছে না, দেখছে কোম্পানির স্বার্থ। যখন কোনো দেশ এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হয় তখন সে দেশে দুর্যোগ দেখা দিতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘সরকারের ন্যূনতম জ্ঞান থাকলে ভারত সরকারকে বলা উচিৎ বাংলাদেশের কেউ সুন্দরবন চাচ্ছে না। সুতরাং এ প্রকল্প থেকে বিরত থাকুন।’
সুন্দরবনের গুরুত্ব সরকারের কাছে নেই উল্লেখ করে আনু মোহাম্মাদ বলেন, ‘যত তাড়াতাড়ি সুন্দরবন ধ্বংস করা যায়, সরকার সেই ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। কিন্তু সরকার জানে না সুন্দরবন ধ্বংস হয়ে গেলে পুরো বাংলাদেশ অরক্ষিত হয়ে যাবে।’
বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান বলেন, ‘রামপাল নিয়ে সরকারের মন্ত্রী-এমপিদের কথা শুনলে মনে হয় বাতাস, পানি সবকিছুই তাদের কথা অনুযায়ী চলছে। রামপালের ক্ষতি সম্পর্কে ওই এলাকার মাঝিরা যা বুঝতে পারে, সরকারের মন্ত্রী-এমপিরা সেটুকুও বুঝতে পারেন না।’
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ বিডি. রহমতউল্লাহ বলেন, ‘সরকার যদি ভারতীয় সৈন্যবাহিনী নিয়ে এসেও রামপালে বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করে, তারপরও আমাদেরকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে এটি আমরা সরিয়ে দিব। সুন্দরবনকে আমাদের রক্ষা করতেই হবে।’
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি প্রকৌশলী ইমরান হাবিব রমনের সভাপতিত্বে মতামত সভায় আরও বক্তব্য দেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক তৌহিদা রশিদ, পরিবেশ আইনবিদ সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, পরিবেশ বিশেষজ্ঞ ড. আব্দুল মতিন প্রমুখ।