নিজস্ব প্রতিবেদক,বর্তমানকণ্ঠ ডটকম: এ যেনো হঠাৎ বৃষ্টি। এ বৃষ্টি অশ্রু হয়ে মাটিতে পড়েনি। তবে এ হঠাৎ বৃষ্টিটা যেনো রাজনীতির নতুন সমীকরণের ঈঙ্গিত বহন করছে! সে সমীকরণের নাম সোহল তাজ। রাজনীতিকে “না” বলা সোহেল তাজ হঠাৎ করেই উপস্থিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের সরকারি বাসভবনে। দুজনে একসঙ্গে কাটিয়েছেনও অনেকটা সময়।
সৈয়দ আশরাফের ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা যায়, সোহেল তাজ দুপুরের দিকে সৈয়দ আশরাফের বাসায় যান। সেখানে তিনি প্রায় আধা ঘণ্টা অবস্থান করেন। দু’জনে একসাথে দুপুরের খাবারও খান। পরে সোহেল তাজ ১০ থেকে ১৫ মিনিট আশরাফের সাথে একান্তে সময় কাটান।
এদিকে আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলনের একদিন আগে দলের শীর্ষ নেতার বাসায় সোহেল তাজের এমন উপস্থিতি নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে বেশ তোলপাড় শুরু হয়েছে। অনেকেই বলছে, সোহেল তাজের হঠাৎ এ সাক্ষাৎ তার রাজনীতিতে প্রবেশের ইঙ্গিত বহন করছে। আবার অনেকে ধারণা করছে, সম্মেলনের আগে হয়তো সৌজন্য সাক্ষাৎ করতেই এসেছেন তাজ।
তবে অধিকাংশই মনে করছেন, সোহেল তাজের হঠাৎ এমন আগমন “অভিমান” ভেঙে রাজনীতিতে ফেরারই ইঙ্গিত। আওয়ামী লীগের একটি অংশ মনে করে সোহেল তাজ রাজনীতিতে ফিরলে দলের ইমেজ আরও ভারি হবে। সেইসাথে ‘ক্লিন ইমেজ’র নেতৃত্ব যোগ হবে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে।
এর আগে গত ২৩ জানুয়ারি রাতে প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবনে হঠাৎ উপস্থিত হয়েছিলেন তাজউদ্দিনপুত্র সোহেল তাজ। এসময় আবেগে আপ্লুত হয়ে প্রধানন্ত্রী তাকে জড়িয়ে ধরেন। দুই বোন সিমিন হোসেন রিমি ও মাহজাবিন আহমেদ মিমিও তার সঙ্গে ছিলেন। সেখানে তিনি একান্তে সময় কাটিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রীর সাথে। সেসময় সোহেল তাজের রাজনীতিতে ফেরার গুঞ্জন উঠনে তিনি সরাসরি “রাজনীতিকে না” বলে দেন।
প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর তাজউদ্দীন আহমদের ছেলে সোহেল তাজ চারদলীয় জোট সরকার আমলে রাজপথে আন্দোলনে সক্রিয় থেকে অনেকের নজর কাড়েন। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচনে বিপুলভাবে বিজয় অর্জন করে। সেসময় গাজীপুর-৪ (কাপাসিয়া) আসন থেকে তিনি জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি গঠিত মন্ত্রিসভায় সোহেল তাজকে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী করা হয়। এর পাঁচ মাসের মাথায় ২০০৯ সালেই তিনি স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেন।
ওই বছরের ৩১ মে তিনি পদত্যাগ করে মন্ত্রিসভায় পদত্যাগপত্র জমা দেন। কিন্তু তখন তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেননি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিন বছর পদত্যাগপত্র গৃহীত না হওয়ায় ২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে একটি চিঠি দেন তাজ। পাশাপাশি তিনি পদত্যাগ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারিরও আবেদন জানান। সেই সময় থেকে তার ব্যক্তিগত হিসাবে পাঠানো বেতন-ভাতার যাবতীয় অর্থ ফেরত নেয়ারও অনুরোধ জানানো হয় ওই চিঠিতে। এরপর ২০১২ সালের ২৩ এপ্রিলে সংসদ থেকে পদত্যাগ করেন সোহেল তাজ।
তবে দুদিন বাদে যেখানে উপমহাদেশের ঐতিহ্যবাহী বৃহৎ রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলন ঠিক তার আগ মুহূর্তে সোহেল তাজের এই আকস্মিক উপস্থিতি এবং দলের শীর্ষ নেতার সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎ রাজনৈতিক অঙ্গণে বাড়তি আলো ফেলেছে। এখন সেই আলোর রশ্নি কোথায় গিয়ে গড়ায় সেটাই দেখার বিষয়।