1. khandakarshahin@gmail.com : bangla :
  2. cmi.sagor@gmail.aom : cmi Sagor : cmi Sagor
মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১:১৯ পূর্বাহ্ন
বর্তমানকণ্ঠ :-
Welcome To Our Website...



ঠাকুরগাঁওয়ে গণকবর সংরক্ষণের উদ্যোগ নেই

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৬
  • ১৭৩ Time View

ঠাকুরগাঁও,বর্তমানকণ্ঠ ডটকম : মুক্তিযুদ্ধের অনেক রক্তপাত আর নির্যাতনের ঘটনা রয়েছে সীমান্তবর্তী ঠাকুরগাঁও জেলায়। ঠাকুরগাঁও সদরসহ জেলার বিভিন্ন স্থানের গণহত্যা, বধ্যভূমি বা পাকবাহিনীর নৃশংসতার স্বাক্ষর বহনকারী স্থানগুলো চিহ্নিত বা সংরক্ষণের উদ্যোগ স্বাধীনতার ৪৫ বছরেও বাস্তবায়িত হয়নি। ফলে ওই সব স্থানগুলো এখন নিশ্চিহ্ন হওয়ার পথে।
অনেকেই ভুলতে বসেছে ওই সব স্থানের গাছ, মাটি, বাতাস আর নির্মম ঘটনা বহুল স্মৃতিগুলো। এদেশের মুক্তিকামী মানুষকে নির্যাতন ও রক্তের দাগ আর পাকসেনাদের বর্বরতম হিংস্রতার নীরব সাক্ষ্য হিসেবে দাঁড়িয়ে থাকা শেষ চিহ্নগুলো এখনও সংরক্ষণ করা গেলে, হয়তো আগামী প্রজন্ম বলতে পারবে রক্তপাতের মধ্য দিয়ে এ দেশ স্বাধীন হয়েছিল।
ইতিমধ্যে জেলার কয়েকটি স্থানের গাছপালা, ইট-সুরকি ও স্থাপনা কালের আবর্তে বিলীন হয়ে গেছে। ওই সব স্থানে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বিভিন্ন অবকাঠামো। আবার অনেক স্থান এখনও ঠাঁই দাঁড়িয়ে আছে ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে।
এরমধ্যে হাতে গোনা কয়েকটি ছাড়া আজো কোনো স্থানেই নির্মিত হয়নি স্মৃতিস্তম্ভ।
১৯৭১ সালে দেশের অন্যান্য এলাকার মত ঠাকুরগাঁওয়ের মানুষও মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ২৭ মার্চ রিকশাচালক মোহাম্মদ আলী ও ২৮ মার্চ কিশোর নরেশ চৌহান ইপিআরের গুলিতে নিহত হন। ১৫ এপ্রিল আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র সজ্জিত পাকবাহিনীর দখলে চলে যায় ঠাকুরগাঁও।
আওয়ামী লীগের ঘাঁটি বলে পরিচিত ঠাকুরগাঁওয়ের ইসলামনগর থেকে ছাত্রনেতা আহাম্মদ আলী, ইয়াকুব আলী, মাজহারুল, দবিরুল ইসলাম, নুরুজ্জামান ও সিরাজউদ্দীনকে ধরে এনে হানাদার বাহিনীর ঠাকুরগাঁও ক্যাম্পে আটক করে রাখে। কয়েকদিন পর বেয়নেট চার্জে হত্যা করে তাদের লাশ শহরের টাঙ্গন নদীর পশ্চিম পাশে পুঁতে ফেলা হয়। এই স্থানটি এখন অবহেলায় পড়ে রয়েছে।
সদর উপজেলার ফাড়াবাড়িতে এক মুক্তিযোদ্ধার বাবা শেখ শহর আলী ও তার ভাই শেখ বহর আলীসহ ১৯ জন নিরীহ গ্রামবাসীকে ধরে এনে হত্যা করে তাদের লাশ আব্দুর রশিদ ডিগ্রি কলেজের পাশের একটি কূপে ফেলে দেয়। এখানে নেই কোনো স্মৃতিসৌধ।
পাকবাহিনী ও তার দোসররা বড় ধরনের গণহত্যা চালায় সদর উপজেলার জাঠিভাঙ্গা গ্রামে। সেখানে স্থানীয় কিছু লোকের সহায়তায় আশপাশের অনেক গ্রামের প্রায় তিন হাজার নিরীহ গ্রামবাসীকে ধরে এনে পাকবাহিনী গুলি ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করে লাশ মাটি চাপা দেয়। এখানে অবশ্য স্মৃতিসৌধ তৈরি করা হয়েছে।
জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার আওয়ামী লীগ নেতা ডা. সুজাউদ্দীন, বুদ্ধিজীবী অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা, আতাউর রহমান, আব্দুল জব্বার ও মোজাফফর আলীসহ সাতজন রাজনৈতিক নেতাকে ধরে এনে পীরগঞ্জ-ঠাকুরগাঁও পাকা সড়কের তেঁতুলতলা ফার্মে নির্মমভাবে হত্যা করে। বিভিন্ন সময়ে পীরগঞ্জ উপজেলার প্রায় তিন হাজার মানুষকে স্থানীয় রাজাকারদের সহায়তায় ক্যাম্পে ধরে এনে তাদের হত্যা করে জগথা রাইস মিল ও সরকারি কলেজের পাশে মাটি চাপা দেওয়া হয়।

ভোমরাদহ ইউনিয়নের দেশিয়াপাড়া নামক স্থানে স্থানীয় শতাধিক নারী-পুরুষ ও শিশুদের ধরে এনে গণহত্যা চালানো হয়। পরে তাদের লাশ একই গর্তে মাটিচাপা দেওয়া হয়। কিন্তু এই স্থানগুলো সংরক্ষণ করা হয়নি আজো।

জেলার রানীশংকৈল থানা ক্যাম্পের শত্রুবাহিনী স্থানীয় রাজাকারদের সহায়তায় বিভিন্ন গ্রাম থেকে প্রায় তিন হাজার লোককে ধরে এনে খুনিয়াদীঘি নামে পুকুর পাড়ে হত্যা করে তাদের লাশ পুকুরের পানিতে ভাসিয়ে দেয়।

এদিকে বালিয়াডাঙ্গী থানার মুক্তিযোদ্ধা সংগঠক আলহাজ দবিরুল ইসলামের (বর্তমান স্থানীয় সংসদ সদস্য) বাবা আকবর আলীকে বাড়ি থেকে ধরে এনে গুলি করে হত্যার পর লাশ তিরনই নদীতে ফেলে দেয় পাকবাহিনী।

ঝিকরগাছা গ্রামের ২৫ জন লোককে বাড়ি থেকে ডেকে এনে বালিয়াডাঙ্গী ক্যাম্পে এক লাইনে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়। হরিপুর থানার শাইফুদ্দীন, মহিরউদ্দীন, নুরুল ইসলাম, নজরুল ইসলাম, মজিবর রহমান ও তার ভাই এবং হরিপুর মসজিদের ইমামসহ প্রায় শতাধিক ব্যক্তিকে হরিপুর পাকবাহিনীর ক্যাম্পে ধরে আনা হয়। কিন্তু সেখান থেকে কেউ আর ফিরে আসেনি।

জেলার বিভিন্ন এলাকায় শতাধিক স্থানে গণহত্যা চালায় পাকবাহিনী ও তার দোসররা। এরমধ্যে জাঠিভাঙ্গায়, খুনিয়া দীঘিরপাড়ে, দেশিয়াপাড়ায় স্থানীয়ভাবে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হলেও অন্য গণকবরগুলো রয়েছে অরক্ষিত। নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভ অবহেলা আর অযত্নে পড়ে রয়েছে।
স্বাধীনতাযুদ্ধে শহীদদের মধ্যে পীরগঞ্জের অধ্যাপক গোলাম মোস্তফার স্মরণে বাংলাদেশ ডাকবিভাগ বুদ্ধিজীবী স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশ করলেও তার সমাধিস্থান সংরক্ষণে কোনো সরকারি উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। পারিবারিকভাবে ইট দিয়ে সেখানে সমাধিস্থান চিহ্নিত করে রাখা হয়েছে।

এ ব্যাপারে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক আবদুল আওয়াল জানান, সরকারি উদ্যোগে জাঠিভাঙ্গায় একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়েছে। অন্যগুলোও  তৈরি করার করার জন্য মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

প্রধান সম্পাদক
মফিজুল ইসলাম চৌধুরী সাগর

© All rights reserved © 2021 Jee Bazaar |
Theme Customized BY WooHostBD