নিজস্ব প্রতিবেদক,বর্তমানকণ্ঠ ডটকম : আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে উৎসবমুখর পরিবেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করা হবে। বিএনপিকে কোনো আন্দোলনের সুযোগ দেওয়া হবে না।’
বুধবার বিকেলে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ের দলীয় বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, নাসিক নির্বাচন নিয়ে সারা দেশসহ বিশ্বব্যাপী ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছে। এখন পর্যন্ত সেখানে সুন্দর ও উৎসমুখর নির্বাচনী পরিবেশ বিরাজ করছে। এ কারণে নির্বাচনের আকর্ষণ আরো বেড়েছে। আগামীকাল বহুল প্রতীক্ষিত ও প্রত্যাশিত এ নির্বাচন হবে।
তিনি আরো বলেন, আজ আমি একটা সুযোগ নিয়েছি। আমাদের যারা নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরশন নির্বাচনে নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে দলের পক্ষে বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেছেন তাদেরকে ধন্যবাদ দেওয়ার জন্য। তারা নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণার দায়িত্ব পালনে কোনো ব্যত্যয় ঘটাননি।
নাসিক নির্বাচন নিয়ে বিএনপির বিভিন্ন ধরনের ষড়যন্ত্রের কথা তুলে ধরে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তারা নির্বাচনে জিতলে মনে করেন, সব ঠিক। পরাজিত হলে বলেন, সব খারাপ। এবারও তারা এমনটাই হয়ত করবেন। দুপুর পর্যন্ত বলবেন, ঠিক আছে। এরপর হয়ত বলবেন, ঠিক নেই। ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিএনপির পুরনো প্র্যাকটিস। এগুলো আমাদের প্র্যাকটিস না।’
বিএনপির প্রতি অনুরোধ জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘না জেনে, না শুনে অন্ধকারে ঢিল ছুঁড়বেন না। আপনাদের পুরনো অভ্যাসটা ত্যাগ করেন। নালিশ করার অভ্যাসটাও ত্যাগ করেন।’
বিএনপি নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে তাদের জনপ্রিয়তা যাচাইয়ের টেস্ট কেস হিসেবে বেছে নিয়েছে। এখানে তারা দুই ধরনের পলিসি নিয়েছেন। তারা জিতলে বলবেন, সরকারের জনপ্রিয়তা নেই। তাই আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পরাজয় হয়েছে। আর হারলে বলবেন, সরকার ভোট কারচুপি করে বিএনপি প্রার্থীর জয় ছিনিয়ে নিয়েছেন’ বলেন ওবায়দুল কাদের।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, নারায়ণগঞ্জে এখন পর্যন্ত চমৎকার নির্বাচনী পরিবেশ বিরাজ করছে। আমরা ফ্রি ফেয়ার নির্বাচন করার ব্যাপারে দলের নেত্রীর নির্দেশে নির্বাচন কমিশনকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ইসি যখন যেখানে যেটা চাচ্ছে, আমরা সেভাবেই কাজ করছি। আমরা অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করার মাধ্যমে বিএনপিকে আন্দোলন করার কোনো সুযোগ দেব না।
নাসিক নির্বাচনে বিএনপির সেনাবাহিনী মোতায়নের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি কত বার ক্ষমতায় ছিল? তখন কি তারা সেনাবাহিনী মোতায়েন করেছিল। এর আগে তারা তো পাঁচ সিটিতে জিতেছিলেন। সেখানেও কি সেনাবাহিনী মোতায়েন ছিল। আসলে তারা সেনাবাহিনীকে এসব কাজের দায়িত্বে এনে বিতর্কিত করতে চান, এটাই তাদের উদ্দেশ্য।’
বিএনপি চেয়াপারসন খালেদা জিয়ার নির্বাচনী প্রচারণা ঠেকাতেই ৭২ ঘণ্টা আগে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে, বিএনপি নেতাদের এমন বক্তব্যেও সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘৭২ ঘণ্টা আগে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা বন্ধ হয়েছে, এটা আমাদের আরোপিত না। বেগম জিয়াকে ঠেকানোর কথা বলে তারা ভ্রান্ত ও ভিত্তিহীন অভিযোগ করছেন। এটা এর আগে পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সময়ও ছিল।
ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে বৈঠকে আরো উপস্থিত ছিলেন- মাহবুব উল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, আহমদ হোসেন, এ কে এম এনামুল হক শামীম, অসীম কুমার উকিল, ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, সুজিত রায় নন্দী, আফজাল হোসেন, আব্দুস সবুর, দেলোয়ার হোসেন, বিপ্লব বড়ুয়া, মারুফা আকতার পপি, মেরিনা জাহান, আমিরুল আলম মিলন, আনোয়ার হোসেন, এ বি এম রিয়াজুল কবির কাওসার, ইকবাল হোসেন অপু, গোলাম কিবরিয়া চিনু প্রমুখ।
আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে বসে আগামীকাল সকাল ৮টা থেকে নাসিক নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবেন দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা।