নরসিংদী ,বর্তমানকণ্ঠ ডটকম: নরসিংদীর প্রতিমা যায় দেশের বিভিন্ন জেলায় নরসিংদীতে ৩১৭টি মন্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজার আয়োজনকে ঘিরে পুরোদমে চলছে প্রস্তুতি। প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ করতে দিনরাত কাজ করছেন কারিগররা। মন্ডপে মন্ডপে চলছে সাজ সজ্জার ব্যাপক আয়োজন। এ বছর জঙ্গি তৎপরতার কথা বিবেচনায় রেখে শারদীয় উৎসবকে নির্বিঘœ করতে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে জোরদার করা হচ্ছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
জেলা পূজা উদযপান পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, এ বছর নরসিংদী জেলার ৬টি উপজেলায় ৩১৭ টি মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। যা গত বছরের চেয়ে ১৬ টি বেশি। এই উৎসবকে ঘিরে নরসিংদীর প্রতিমা তৈরির কারখানা ও মন্ডপগুলোতে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা শিল্পীরা। ৬ মাস ধরে কাজ করে প্রায় শেষ পর্যায়ে প্রতিমা তৈরির কাজ। এখন চলছে রংয়ের প্রলেপ ও অঙ্গ সজ্জা। শিল্পীর তুলির ছোঁয়ায় পূর্ণাঙ্গ রূপ পাচ্ছে প্রতিমাগুলো। মনের মাধুরী মিশিয়ে রং তুলির আঁচড়ে মা দূর্গাকে সাজাচ্ছেন প্রতিমা শিল্পীরা। হিন্দু সম্প্রদায়ের সর্ব বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজাকে ঘিরে নরসিংদীর তৈরি প্রতিমা সরবরাহ করা হয় দেশের বিভিন্ন জেলায়। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য জেলার মধ্যে রয়েছে, সিলেট, ব্রাম্মনবাড়ীয়া, হবিগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ। তবে খড়, বাঁশ, লোহা, রশি, মাটি, রংসহ প্রতিমা তৈরির প্রয়োজনীয় উপকরণের মূল্য বৃদ্ধির কারণে প্রতিমা তৈরিতে লাভ নিয়ে শংকার মধ্যে রয়েছেন তারা।
নরসিংদীর তুর্জয় প্রতিমা শিল্পালয়ের মালিক শ্রী দুলাল পাল জানান, বাঁশ, কাঠ, খড় ও লোহাসহ প্রতিমা তৈরির উপকরণের মূল্য বৃদ্ধির ফলে আগের মতো লাভের মুখ দেখা যায় না। তবুও বাপ-দাদার পেশা হিসেবে এ শিল্পকে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করছি।
নরসিংদীর প্রতিমা যায় দেশের বিভিন্ন জেলায় নিউ শরীয়তপুর ভাস্কার্যালয়ের মালিক প্রতিমা শিল্পী গৌতম কুমার পাল বলেন, রং তুলির আঁচড়ে প্রতিটি প্রতিমাকে দৃষ্টিনন্দন করে তোলার কাজ চলছে। অর্ডার অনুযায়ী সময় মতো প্রতিমা সরবরাহের জন্য দিনরাত কাজ করতে হচ্ছে আমাদের। তবে নানা কারণে প্রতিমা তৈরিতে লাভের পরিমাণ কমে গেছে।
নরসিংদী জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদ এর সাধারণ সম্পাদক দীপক কুমার সাহা বলেন, আনন্দঘন পরিবেশে পূজা উদযাপনের জন্য পূজা কমিটির নেতৃবৃন্দ কাজ করে যাচ্ছেন। এরই মধ্যে প্রতিটি মন্ডপ এলাকায় কোনো প্রকার সমস্যা আছে কিনা সেসব বিষয়ে খোঁজ-খবর নেয়া হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অসাম্প্রদায়িক দেশের সকল মানুষ এক অভিন্ন হিসেবেই এই উৎসব পালন করবো।
জেলা পুলিশ সুপার আমেনা বেগম বলেন, সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলার ঘটনার দিক মাথায় রেখে শারদীয় দুর্গোৎসবকে নির্বিঘœ করতে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে নেয়া হচ্ছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। মন্ডপগুলোতে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের পাশাপাশি পুলিশ, র্যা ব ও আনসার সদস্য মোতায়েন করা হবে, থাকবে স্বেচ্ছাসেবকরাও। তবে পূজার দর্শনার্থীরা যাতে অতিরিক্ত কোন জিনিসপত্র, বিশেষ করে ব্যাগ বহন না করেন সে বিষয়ে নির্দেশনা থাকবে।