নিজস্ব প্রতিবেদক,বর্তমানকণ্ঠ ডটকম: ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভায় জনানো হয়েছে, দেশের প্রথম স্যাটেলাইট (কৃত্রিম উপগ্রহ) বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ বর্তমান কর্ম পরিকল্পনা অনুযায়ী আগামী ১৬ ডিসেম্বর উৎক্ষেপণ করা সম্ভব হবে।
মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) কমিটির সভাপতি ইমরান আহমদের সভাপতিত্বে সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত সভায় এ কথা জানানো হয়। কমিটির সদস্য ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম এবং মোয়াজ্জেম হোসেন রতন সভায় অংশগ্রহণ করেন।২০১৫ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট’ উৎক্ষেপণের মূল কাজ শুরুর চুক্তি সই হয়। ফ্রান্সের থ্যালেস এলেনিয়া স্পেসের সঙ্গে এ চুক্তি সই করে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। এ সময় ২০১৭ সালের ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে মহাকাশে এ কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণের লক্ষ্য ঠিক করা হয়।
চুক্তি অনুযায়ী, স্যাটেলাইটের কাঠামো, উৎক্ষেপণ-ব্যবস্থা, ভূমি ও মহাকাশের নিয়ন্ত্রণ-ব্যবস্থা, ভূ-স্তরে দুটি স্টেশন পরিচালনা ও ঋণের ব্যবস্থা করবে ফ্রান্সের নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি। ফ্রান্সের থুলুজে স্যাটেলাইটটির মূল কাঠামো তৈরি করবে থ্যালেস।
এ প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৯৬৭ কোটি টাকা। উপগ্রহ উৎক্ষেপণের মূল কাজ ‘স্যাটেলাইট সিস্টেম’ কেনার জন্য খরচ হবে ১ হাজার ৯৫১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। ২০১৫ সালের ২০ অক্টোবর সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি স্যাটেলাইট সিস্টেম কেনার ক্রয় প্রস্তাবটির অনুমোদন দেয়।
এ স্যাটেলাইটের উৎক্ষেপণের জন্য রাশিয়ার ইন্টারস্পুটনিকের কাছ থেকে ১১৯ দশমিক ১ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অরবিটাল স্লট কেনে বাংলাদেশ। এ জন্য খরচ হয় ২১৮ কোটি ৯৬ লাখ টাকা।
গাজীপুরের জয়দেবপুর ও রাঙামাটির বেতবুনিয়ায় বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের দুটি গ্রাউন্ড স্টেশন স্থাপনের জায়গা ঠিক করা হয়েছে। প্রস্তাবিত স্যাটেলাইটের ৪০টি ট্রান্সপন্ডার ক্যাপাসিটি থাকবে।
এর মধ্যে ২০টি ট্রান্সপন্ডার নিজেদের ব্যবহারের জন্য রেখে বাকিগুলো ইজারা দিতে পারবে বাংলাদেশ। বর্তমানে বিদেশি স্যাটেলাইটের ভাড়া বাবদ প্রতিবছর ১ কোটি ৪০ লাখ ডলার খরচ হয়।
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপিত হলে দেশের সব মানুষকে যোগাযোগ ও সম্প্রচার সুবিধার আওতায় আনার সরকারের লক্ষ্য পূরণ হবে। একই সঙ্গে দুর্যোগপ্রবণ বাংলাদেশে নিরবচ্ছিন্ন টেলিযোগাযোগ সেবা নিশ্চিত হবে। স্যাটেলাইটের বর্ধিত ফ্রিকোয়েন্সি ভাড়া দিয়ে বৈদেশিক মুদ্রাও উপার্জন করা যাবে।