নিজস্ব প্রতিবেদক,বর্তমানকণ্ঠ ডটকম: বাগদাদের খলিফা হারুনুর রশিদ মাঝেই মাঝেই ছদ্মবেশে লোকালয়ে ঘুরে বেড়াতেন প্রজাদের দুঃখ দুর্দশা দেখার জন্য। তারপর দরবারে এসে সেসব সমস্যার স্থায়ী সমাধান করতেন। বাংলাদেশ সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের প্রায়ই যানবাহনের অবস্থা দেখার জন্য রাস্তায় নামেন। বাসের লাইসেন্স, বাইক চালকের হেলমেট বা শার্টের বোতাম নিয়ে নানা কর্মকাণ্ডে বারবার আলোচনায় এসেছেন তিনি।
সেই ধারাবাহিকতায় এবার মন্ত্রী চড়লেন বিআরটিসি বাসে। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে তিনি নিজবাসা থেকে বের হন। সচিবালয়ে অফিসে আসার জন্য আসাদগেট থেকে যাত্রা শুরু করে জাতীয় প্রেস ক্লাবে পৌঁছান। এ সময় তিনি সাধারাণ যাত্রীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন এবং তাদের সুবিধা-অসুবিধার কথা জানতে চান। মন্ত্রীর কাছে একজন নারী যাত্রী অভিযোগ করে বলেন, যাত্রী বাসে মহিলা আসন সংখ্যা এমনিতেই কম, তার উপর সবসময় এই আসনগুলো পুরুষেরা দখল করে রাখে।
এছাড়াও যাত্রীদের আরো অভিযোগ ছিল- বাসের চালক, কন্ডাক্টর ও হেলপারের ব্যবহার অনেক খারাপ। যাত্রীরা জানান, প্রয়োজনের তুলনায় বাসও অনেক কম। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে হাফ ভাড়া নেওয়ার নিয়ম থাকলেও তা মানা হয় না। এসব শোনার পর মন্ত্রী যাত্রীদের জানান, বিআরটিসি’র দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেবেন।
তবে মন্ত্রী বাস থেকে নেমে যাবার পর যাত্রীরা নানা রকম বিরূপ মন্তব্য করেন। এক যাত্রী বলেন, মন্ত্রীর কাজ অনেকটা কলকাতার সিনেমার ‘ফাটাকেষ্ট’র অনুকরণ।
এদিকে মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের এসব কর্মকাণ্ড তার নিজ দলের ভেতরেও সমালোচিত। আওয়ামী লীগের অনেক নেতাই এ বিষয়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেছেন। আওয়ামী লীগের অনেক নেতাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রকাশ্যে লিখছেন, মন্ত্রী যা অন্যকে করতে বলছেন তা তিনি নিজে করেন না।
ফেসবুকে অসংখ্য আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও সাধারণের কমেন্টে দেখা যায় তারা লিখেছেন, দলের চেয়ে নিজেকে বেশি হাইলাইট করতে চান ওবায়দুল কাদের। রাজনীতির কথা, উন্নয়নের অনেক মুখরোচক কথা তিনি বলেন যার কার্যকারিতা সংবাদ শিরোনামেই সীমাবদ্ধ।
ওবায়দুল কাদেরের বাসে চড়ে একদিন অফিস করার ফলে বিআরটিসির সেবায় স্থায়ী কোনো ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে কিনা জানতে চাইলে তার জনসংযোগ কর্মকর্তা আবু নাসের বৃহস্পতিবার দুপুরে বলেন, কিছু উন্নতি তো হচ্ছে।
নাসের বলেন, মন্ত্রী সকালের বাসটিতে কিছু সমস্যা পেয়েছেন। তাই বিআরটিসির দুজনকে শোকজও করেছেন। দুপুরে মন্ত্র্রী ফার্মগেট থেকে বিআরটিসিতে চড়ে আব্দুল্লাহপুর যান বলে উল্লেখ করে মন্ত্রীর এই কর্মকর্তা বলেন, ফার্মগেটের বাসটি ভাল চলছে। বিআরটিসির এই বাসটির খোঁজ-খবর মন্ত্রী দু’মাস আগেও নিয়েছিলেন।