লক্ষন বর্মন,বর্তমানকণ্ঠ ডটকম: নরসিংদীতে জেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটি গঠন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে জেলার সর্বত্র ছাত্রলীগ কর্মীদের মাঝে নির্বাচনী প্রার্থী নিয়ে ল্পনা-কল্পনার ঝড় বইছে। এ নিয়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় পর্যায়সহ স্থানীয় আওয়ামীলীগের সিনিয়র নেতৃবৃন্দের দ্বারে দ্বারে জেলা ছাত্রলীগের সম্ভাব্য প্রার্থীদের জোড়-তদবির চলছে। এরই প্রেক্ষিতে জেলার সর্বত্র জমে উঠেছে ছাত্রলীগের নতুন কমিটির নির্বাচনী উত্তাপ। অতি সম্প্রতি ছাত্রলীগের নতুন কমিটি ঘোষিত হবে বলে সংবাদ সূত্রে পাওয়া গেছে।
সূত্রমতে জানা যায়, গত ১৯ জুলাই ২০১৫ কাজী মামুনকে আহ্বায়ক করে ৭ সদস্যের একটি কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটির যুগ্ম আহ্বায়করা হলো, ইসহাক খলিল বাবু, আল-আমিন, রাকিবুল কবির, ইয়াকুব ভূঞা, কৌশিক কায়কোবাদ কেনি, রেহানুল ইসলাম ভূঞা লেলিন।
২০১০ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলনে শাহ আলম সভাপতি ও শামীম নেওয়াজ সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়। দলীয় নীতিমালা অনুযায়ী কমিটির মেয়াদ ২ বছর হলেও ৫ বছর পর চলতি বছরের ১৮ এপ্রিল জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু সম্মেলনে ৩ সভাপতি প্রার্থীদের মধ্যে বিশৃঙ্খলার কারণে কমিটি ঘোষণা না করেই সম্মেলন স্থল ত্যাগ করে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। এরই মধ্যে জেলা ছাত্রলীগের কমিটিতে নিজেদের আস্থাভাজনদের স্থান নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে চলে নীরব প্রতিযোগীতা। এমন পরিস্থিতিতে কমিটি ঘোষণা নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়।
বিগত সময়ের জেলা ছাত্রলীগের ত্যাগী ছাত্রনেতাদের অন্তর্ভূক্ত ছাড়াই দলীয় প্রভাবে ছাত্রলীগের আহবায়ক হয়ে যায় কাজী মামুন। এর পর থেকেই নানা প্রশ্ন তুলে জেলা ছাত্রলীগের পদবঞ্চিত ও ত্যাগী নেতাকর্মীরা। অবশেষে তীব্র প্রতিবাদের মুখে মাত্র ১১ মাস পর ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি’র বর্ধিত সভায় নরসিংদী জেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত করা হয়।
বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এইচ. এম. বদ্দিজ্জামান সোহাগ বলেছেন, ‘নরসিংদী জেলা ছাত্রলীগকর্মরা বিগত সময়ে আওয়ামীলীগের অন্তিম মূহুর্তে যারা একনিষ্টভাবে দলের নানামূখী কার্যক্রমে সাহসিকতার পরিচয় বহন করেছে তাদের কোন বিকল্প নেই। এর মাঝে ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রেহানুল ইসলাম ভূঞা লেলিন,কৌশিক কায়কোবাদ কেনি ও সাহিদুল ইসলামসহ দলের ত্যাগী নেতা-কর্মীদের ব্যাপক ভূমিকা ছিল। এ জন্যই তারা আওয়ামী পরিবারের পরীক্ষিত সৈনিক।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামসুল কবির রাহাত বলেন, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারী নির্বাচনে ছাত্রলীগ নেতা সাহিদুল ইসলাম বিএনপি-জামায়াত এর হাতে নির্যাতিত হয়। একজন সাবেক ছাত্র নেতা হিসেবে তিনি বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের গতিধারা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটিসহ তৃণমূলের নেতারা যেন বিষয়টি দৃষ্টি রেখে নরসিংদী জেলা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদেরকে একটি সুন্দর কমিটি উপহার দেয়।
কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি মোঃ সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এস.এম. জাকির হোসেন জানান, খুব শিগঘির নরসিংদী জেলা ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশিত কমিটি উপহার দেয়া হবে।
বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ’র রাজপথের সকল আন্দোলন সংগ্রামে বিগত সময়ে সাংগঠনিক তৎপরতাসহ দলীয় কার্যক্রমের গতিশীলতা বজায় রাখতে নরসিংদী জেলা ছাত্রলীগের দক্ষ ও সাহসী ভূমিকা প্রশংসনীয়। নরসিংদী জেলার ছাত্র-রাজনীতির সঙ্গে জড়িত জেলার তৃণমূল পর্যায়ের সকল নেতা-কর্মীসহ সাধারণ শিক্ষার্থীরা দলটির শীর্ষস্থানীয় নেতাদের নিকট শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানসহ জেলার সর্বত্র সন্ত্রাসমুক্ত রাখতে ছাত্রলীগের সাহসী ও নির্ভিক সৈনিকদের সমন্বয়ে একটি সুন্দর সাবলীল জেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটি উপহার দেয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করে।