রাজশাহী: মহানগরীর নওদাপাড়া এলাকায় অবস্থিত আরবান হেলথ কেয়ার থেকে নবজাতক চুরির ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পিতবার (১৯ জানুয়ারি) দিবাগত রাত সাড়ে দশটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এঘটনায় (২০ জানুয়ারি) প্রসূতির মা রোজিনা বেগম বাদী হয়ে মহানগরীর শাহ মখদুম থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। এখন পর্যন্ত অনেক খোঁজাখুজির পরেও শিশুটিকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।
আরবান হেলথ কেয়ার সেন্টারের ম্যানেজার আপেল জানান, ডাশমারী আরবান কেয়ার ইউনিট থেকে মুক্তি খাতুন নামে এক নারী বৃহস্পতিবার বিকেলে ভর্তি হয়। ওই ইউনিটে সিজারিয়ানের ব্যবস্থা না থাকার কারণে তাকে নওদাপাড়া ইউনিটে ভর্তি করা হয়।
ওই হেলথ কেয়ারের আয়া লাজ খাতুন প্রসূতিকে বৃহস্পতিবার বিকেলে নওদাপাড়া ইউনিটে নিয়ে আসে সিজার করার জন্য। সেই সময় এক নারী তাদের সঙ্গে আসে। ওই নারীর সঙ্গে আয়া লাজ খাতুনের দুই দিন আগে পরিচয় ঘটে। প্রসূতি মুক্তি ও আয়া লাজের সঙ্গে ওই নারীও নওদাপাড়া আরবান হেলথ কেয়ার ইউনিটে আসেন। এরপরে সন্ধ্যায় সিজারিয়ানের মাধ্যেমে মুক্তি খাতুন ছেলে সন্তান প্রসব করেন।
ওই নারী মুক্তি খাতুনের বেশ সেবা করেন। এক পর্যায়ে রাত সাড়ে দশটার দিকে ওই নারী সকলের অগোচরে শিশুটিকে নিয়ে পালিয়ে যায়।
প্রসূতি মুক্তি খাতুনের মা রোজিনা জানান, আয়া লাজ খাতুনের সঙ্গে থাকার কারণে ওই নারীকে ক্লিনিকের কাজ করে বলে তারা ধরে নিয়েছিলো। সে কারণ শিশুটি কোলে নেয়া, গরম কাপড় জড়িয়ে দেয়ার সব কাজই সে করেছে। শিশু নিখোঁজ হওয়ার পরে সে জানতে পারে যে ওই নারী আরবান ক্লিনিকের কেউ না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হেলথ কেয়ারের এক কর্মচারী জানান, নওদাপাড়া আরবান হেলথ কেয়ারে এসে ওই নারী নিজেকে প্রসূতির খালা হিসেবে নিজের পরিচয় দেয়। সে কারণে তাকে কিছু বলা হয়নি। রাত সাড়ে দশটার দিকে ওই নারী শিশুটিকে নিয়ে বাইরে বের হয়ে যাওয়ার সময় কেয়ারের এক কর্মচারী তাকে জিজ্ঞাসা করে। তখন ওই নারী জানায়, শিশুটির অবস্থা ভালো না সে কারণে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আরবান কর্তৃপক্ষের কাছে প্রসূতির খালা সেজে আবার প্রসূতির কাছে হেলথ কেয়ারের মানুষ সেজে কৌশলে ওই নারী শিশুটিকে চুরি করে।
এদিকে শিশুটিকে নিখোঁজ হওয়ার পরে কেয়ারের পক্ষ থেকে পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয়। এরপরেই পুলিশ এসে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে আয়া লাজ খাতুনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পরে শুক্রবার দুপুরে প্রসূতি মুক্তি খাতুনের মা রোজিনা বাদী হয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
শাহ মখদুম থানার ওসি জিল্লুর রহমান জানান, থানায় লিখিত অভিযোগ হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আয়া লাজ খাতুনকে আটক করা হয়েছে। নবজাকটিকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। এর সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।