রাসেল খান,বর্তমানকণ্ঠ ডটকম: রাজধানীর উত্তরায় কিশোর আদনান হত্যা মামলার এজাহার ভুক্ত আসামিদের বেশিরভাগই পলাতক। এই হত্যাকান্ডের পর ৯ জনের নাম উলেক্ষ করে এবং দশ অজ্ঞাতনামার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হলেও এজাহার নাম ভুক্তদের মধ্য থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে মাত্র দু’জনকে। তারা হলো সাদাফ জাকির ও নাসির আলম ডন। এছাড়া অজ্ঞাতনামা হিসেবে আটক করা হয়েছে মেহেরাব হোসেন নামের একজনকে। মেহেরাব আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে দিয়েছে। এ সময় সে আদনান হত্যাকান্ডে জড়িত সাতজনের নাম উলেক্ষ করে আরও দশজন অজ্ঞাতনামার কথা জানিয়েছে।
এ ঘটনায় উত্তরা (পশ্চিম) থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘তারা পরস্পর পরস্পরকে চেনে কিন্তু মুখ না খোলার কারণে আমাদের খানিকটা সময় লাগছে। মোটামুটি ভাবে বলা যায় এজাহার থেকেই অজ্ঞাতনামার গোলকধাঁধা তৈরি হয়েছে। সবাই সবাইকে চেনে কিন্তু নাম বলতে চায় না।তিনি আরো জানান,উত্তরায় দুই গ্রুপের সংঘর্ষে স্কুলছাত্র আদনান কবিরকে (১৪) স্কুল ছাত্র হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার নাসির আলম ডনকে দুই দিনের রিমান্ডে নেওয়ার পর কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আর গ্রেফতার সাদাফ জাকিরকে পাঠানো হয়েছে কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে। এছাড়া এজাহারের বাইরে আটক মেহেরাবকে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে যে সাতজনের নাম উলেক্ষ করেছে, তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গত ৬ জানুয়ারি সন্ধ্যায় ১৩ নম্বর সেক্টরের ১৭ নম্বর রোডে ট্রাস্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র আদনান কবিরকে খেলার মাঠে পিটিয়ে এবং কুপিয়ে মারাত্মক আহত করে প্রতিপক্ষ। চিকিৎসার জন্য তাকে উত্তরা লুবানা হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার পর প্রকাশ পায় উত্তরায় ‘গ্যাং-কালচার’ নামক একটি সংগঠন আধিপত্য বিস্তারকে ঘিরে তাদের পরস্পরের মারামারি হানাহানি হয়। উত্তরা স্থানীয়বাসীরা বলছেন, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে এই দুই গ্রুপের মধ্যে বেশ অনেক দিনের ধদ্ব্য। তারা কেউ কাউকে চেনে না বললে হাস্যকর শোনাবে।
উত্তরা কালচারাল সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক রবিউল মাহমুদ বলেন,এই গ্রুপের কিশোর ও তরুণরা লেখাপড়া ফাঁকি দিয়ে নানা অপকর্মের সাথে জড়িয়ে পড়েছে। তারা এলাকায় আড্ডাবাজি করে, উচ্চ শব্দে মোটরসাইকেল চালায়। তাদের গুরুজন হিসেবে কিছু বলার সুযোগ নেই। তিনি আরও বলেন, উত্তরায় আমরা নানাধরনের সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড চালাই কিন্তু সুনির্দিষ্ট এসব পরিবারের অভিভাবকরা কোনও দিন কালচারাল কোন আয়োজনে জড়িত ছিলেন না। ফলে বিভিন্ন বিশেষ দিবসে অনুষ্ঠানের নামে তারা এলাকাবাসীর টাকায় ড্যান্স পার্টি করে।
পলাতক আসামিদের গ্রেফতারের ব্যাপারে উত্তরা (পশ্চিম) থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী হোসেন খান বলেন, ‘খুনের খবর পেয়ে উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ সেই রাতেই উত্তরা ১৩ নম্বর সেক্টরসহ আশপাশ এলাকায় ঝটিকা অভিযান চালিয়ে হত্যাকান্ডে জড়িত দুই জনকে আটক করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত আছে।
এলাকাবাসী বলছে, থানায় একাধিকবার তাদের কর্মকান্ড নিয়ে জানানোর পরও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ওসি বলেন, ‘আমাদের এখানে কেউ অভিযোগ নিয়ে আসেনি। এর আগেও এ রকম কিশোরদের ঝুট ঝামেলা হয়েছে, কিন্তু সেসব থানা পর্যন্ত গড়ায়নি।