খুলনা: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, “দেশের জাহাজ নির্মাণ শিল্পে খুলনা শিপইয়ার্ড মাইলফলক হয়ে থাকবে। যুদ্ধ জাহাজ নির্মাণের ফলে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের মর্যাদা বৃদ্ধি পেয়েছে। জলযান নির্মাণ শিল্পে বাংলাদেশকে স্বাবলম্বী করতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে এ শিপইয়ার্ড।”
রবিবার (০২ অক্টোবর) দুপুরে খুলনা শিপইয়ার্ডে বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের জন্য নির্মিতব্য তিনটি ইনশোর প্যাট্রোল ভেসেলের কিল লেয়িং অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, “প্রায় দেড় যুগ আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে মহৎ উদ্দেশ্যে ও স্বপ্ন বাস্তবায়নের দুরদর্শী পদক্ষেপ নিয়েছিলেন, তা খুলনা শিপইয়ার্ড যথার্থই প্রমাণ করেছে। বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে হস্তান্তরের পর হতে এটি আজ ক্রমান্বয়ে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। ইতোমধ্যেই এ ইয়ার্ড প্রথম যুদ্ধ জাহাজ, পাঁচটি প্যাট্রোল ক্রাফট সফলভাবে নির্মাণ করে নৌবাহিনীকে হস্তান্তর করেছে এবং দুইটি লার্জ প্যাট্রোল ক্রাফট নির্মাণ করছে। নব নব জাহাজ নির্মাণ শুধুমাত্র প্রতিষ্ঠানটিকেই সমৃদ্ধ করছে না, জাতীয় অর্থনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। খুলনা শিপইয়ার্ড দেশের চাহিদা পূরণ করে ভবিষ্যতে বিদেশেও জাহাজ রপ্তানি করবে।”
তিনি বলেন, “এ ইয়ার্ডে দ্রুত গতিসম্পন্ন তিনটি ইনশোর প্যাট্রোল ভেসেল (আইপিভি) নির্মিত হলে সমুদ্র এলাকায় নিরাপত্তা, সম্পদ আহরণ ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড- এর ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন আরও সহজতর হবে। দেশের জলসীমার বিশাল সমুদ্র এলাকায় আগামী দিনের উপযোগী জলযান তৈরির চাহিদা পূরণের জন্য শিপইয়ার্ড সৃষ্টিশীল নতুন প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আন্তরিক ভাবে কাজ করছে। এ অর্জনকে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ধরে রাখতে হবে।”
অনুষ্ঠানে মন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে জাহাজের কিল লেয়িং, কেক কাটেন এবং শিপইয়ার্ড প্রাঙ্গণে একটি গাছের চারা রোপন করেন এবং মোনাজাতে অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য মুহাম্মদ মিজানুর রহমান, র্যাবের মহাপরিচালক বেনজির আহমেদ, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, কুয়েটের ভিসি, কেসিসি মেয়রসহ ঊর্ধ্বতন সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ এবং খুলনা শিপইয়ার্ডের এর সর্বস্তরের কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিকরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, খুলনা শিপইয়ার্ডে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের জন্য প্রায় ২৭০ কোটি টাকা ব্যায়ে তিনটি ইনশোর প্যাট্রোল ভেসেল (আইপিভি) নির্মিত হতে যাচ্ছে। জাহাজের সাধারণ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে- সর্বোচ্চ দৈর্ঘ্য ৫০.৪০ মিটার, প্রস্থ ৭.৫০মিটার, গভীরতা ৪.১০মিটার, ড্রাফট ১.৯৫ মিটার, ডিসপ্লেসমেন্ট তিনশ মেট্রিক টন, সর্বোচ্চ গতি ২৩ নট এবং ক্লাসিফিকেশন সোসাইটি-চায়না ক্লাসিফিকেশন সোসাইটি।