এম এ রহিম,বর্তমানকণ্ঠ ডটকম: বেনাপোলে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় বুধবার বিকালে তদন্ত টিমের সাথে স্থানীয় সাংবাদিকদের মতবিনিময় হয়েছে। তদন্ত টিমের প্রধান নৌ পরিবহন মন্ত্রনালয়ের যুগ্ন সচিব সাফায়েত হোসেন বলেন। দেশের বৃহৎ স্থল বন্দর বেনাপোল। ১৯৭৩সালে প্রতিষ্টিত এ বন্দর দীর্ঘ প্রায় ৪ যুগের ব্যাবধানে অনেক এগিয়েছে। সরকারের বছরে বৃহৎ রাজস্ব আহরন হয় বন্দর থেকে। আমদানি রফতানি বানিজ্য বেড়েছে বহুগুন। তবে কয়েক বছরের ব্যাবধানে একের পর অগ্নিকান্ডের ঘটনা বন্দর কর্তৃপক্ষের অবব্যাবস্থাপনা দুর্বল নিরাপত্তা,একই শেডে ধাতব পদার্থের সাথে তুলা লোহা কাপড় সহ বিভিন্ন মালামাল রাখা ও ঘোষনা বহিৃভুত মালামাল রাখার প্রমান পেয়েছেন তারা।
তিনি বলেন বন্দরের মধ্যে শ্রমিকদের অপেন বিড়ি সিগারেট খাওয়া,নাশকতা, ক্যামিক্যালের সাথে তুলা রাখা, বিদ্যুতের সর্ট সার্কিট সহ বিভিন্ন কারনে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটতে পারে বলে ধারনা করেন তারা। নাশকতার বিষটিকে গুরত্ব দিয়ে দেখছেন তারা। বিষয়টি কতৃৃপক্ষকে জানাবেন। উদঘাটিত হয়েছে অনেক ঘটনা।
২ অক্টোবর বন্দরের ২৩ নং শেডে ১৩৭টি কনসাইনমেন্টে ১৮কোটি ৫০লাখ ৫শ ৫৬টাকার মালামাল ভস্মিভুত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারনা করেন তারা। ২৩ নং শেডে পিতলের মূর্তি সহ বিভিন্ন ঘোষনা বর্হিভ’ত মালামাল রাখার প্রমান পান তারা।
এঘনায় ২ আনসার সদস্যকে বহিস্কার করা হয়েছে।
এসময় উপস্তিত ছিলেন স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব হাবিবুর রহমান, যশোর জেলা প্রশাসনের প্রতিনিধি শার্শা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: আব্দুস সালাম, ও ফায়ার সার্ভিস যশোরের সহকারী পরিচালক পরিমল চন্দ্র কুন্ডু ও ফায়ার সাভির্সের তদন্ত কমিটির প্রধান রাজশাহী অঞ্চলের উপ পরিচারক নুরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
বন্দরের কর্মকর্তাদের অবহেলা ও অব্যবস্থাপনাকেই তিনি দায়ী করে বলেন, কেমিকেল শেড থাকার পরও কেন এ শেডে তুলার সাথে কেমিকেল রাখা হলো সেটাও দেখা হচ্ছে। প্রয়োজনে আরো তদন্ত করতে হবে। নাশকতামুলক ভাবে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটনো হয়েছে বলে তারা প্রকাশ্যে না বললেও তাদের কথায় এটা স্পস্ট হয়ে উঠেছে।
বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোষ্ট যাত্রী টার্মিনালের বন্দরের মিলনায়তনে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় একাধিক বিষয়ে গুরুত্বপূনৃ তর্থ সহযোগিতা কামনা করেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তদন্ত কমিটির প্রধান জানান, তদন্তে এ পর্যন্ত ১৩৭টি পণ্য চালান আগুনে পুড়ে গেছে। তাতে বাংলাদেশী টাকায় পরিমান হচ্ছে ১৮ কোটি ৫০ লাখ ৬৪ হাজার ৫২৬ টাকা।
এছাড়াও আরো কোন পণ্য ছিল কিনা তা পাওয়া গেলে এর সাথে সংযুক্ত করা হবে। বন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারসহ সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন, কেপিআই জোনের জন্য প্রয়োজনীয় সব কিছু করার ব্যাপারে তাদের তদন্ত রিপোর্টে উল্লেখ করা হবে বলে। বেনাপোল বন্দরের অবকাঠামো উন্নয়নে কিছুটা অব্যবস্থাপনা রয়েছে যা আমরা উপলব্ধি করতে পেরেছি। এ নিয়ে আমরা ঢাকায় বসে আলোচনা করব। ক্ষতিপূরণের ব্যাপারে বীমা কোম্পানী ক্ষতিপূরণ বিষয়টি দেখবেন বলে তিনি জানান। এছাড়া বন্দরের গেটের সংখ্যা কমানো ও পিছনের সড়কটি চার লেনে রুপান্তরিত করার ব্যাপারে তদন্ত কমিটির রিপোর্টে সুপারিশ করা হবে।
অগ্নিকান্ডের ঘটনায় নৌ পরিবহন মন্ত্রনালয়ের গঠিত চার সদস্যের তদন্ত টিম বেনাপোল স্থলবন্দরের প্রশাসনিক ভবনে ক্ষতিগ্রস্থ ২৩ নং শেডের ট্রাফিক পরিদর্শক, আনসার সিকিউরিটির ৪জন সদস্য, বেনাপোল পোর্ট থানার অফিসার ইনচার্জ অপুর্ব হাসান, বন্দর ফায়ার সার্ভিসের ইনচার্জ অঞ্জন কুমার, ইলেকট্রিশিয়ান খোরশেদ আলম, বেনাপোল স্থল বন্দরের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আব্দুল ওয়াদুদ মিল্কি, উপ-পরিচালক আব্দুল জলিল, বন্দর লেবার ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দ, বন্দর কর্মচারী ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ, আমদানিকারক প্রতিনিধি, কাষ্টম প্রতিনিধি এবং সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের প্রতিনিধিদের সাথে কথা বলেন।
ক্ষতিগ্রস্ত শেড পরিদর্শন শেষে এ শেডের পণ্য চালানের কাগজ পত্র দেখেন। এ সময় তদন্ত টিমের প্রধানের সাথে অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে বেনাপোল স্থলবন্দর ও স্থানীয় ফায়ার সার্ভিসের ১৭ জন সদস্য পুড়ে যাওয়া শেডে এখনো দায়িত্ব পালন করছেন বলে জানালেন বেনাপোল ফায়ার সার্ভিসের ষ্টেশন অফিসার কাওছার আলী। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের এ টিম এখানে কাজ করবেন বলে জানালেন ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক পরিমল চন্দ্র কুন্ডু।