যশোর,বর্তমানকণ্ঠ ডটকম:: ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটি আহুত নওয়াপাড়ায় রাজপথ ও রেলপথে অবস্থান কর্মসূচি পালন করতে দেয়নি পুলিশ।
সকাল থেকে জলাবদ্ধ এলাকার মানুষ সংঘবদ্ধ হয়ে যশোর-খুলনা মহাসড়কের নওয়াপাড়ার প্রেমবাগ এলাকায় আসতে শুরু করে। কিন্তু পথে পথে পুলিশ তাদের বাধা দেয় বলে অভিযোগ করেন সংগ্রাম কমিটির ভারপ্রাপ্ত সদস্যসচিব চৈতন্যকুমার পাল।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জলাবদ্ধ সহ্রাধিক মানুষ নূরবাগ এলাকায় রাস্তার ওপর বসে পড়লে পুলিশ তাদের ওপর হামলা করে। পুলিশের লাঠিচার্জে সংগ্রাম কমিটির প্রধান উপদেষ্টা ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা সভাপতি ও কেন্দ্রীয় পলিট ব্যুরো সদস্য ইকবাল কবির জাহিদ, ভারপ্রাপ্ত সদস্যসচিব চৈতন্য পাল, সমন্বয়ক বৈকুণ্ঠবিহারী রায়সহ ৬০-৭০ জন নারী-পুরুষ-শিশু আহত হন। এদের স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে।
আন্দোলন কমিটির নেতারা অভিযোগ করেন, পুলিশ সম্পূর্ণ বিনাউস্কানিতে জলাবদ্ধ এলাকার দুর্গত মানুষের ওপর হামলা চালিয়েছে।
সংগ্রাম কমিটির ভারপ্রাপ্ত সদস্যসচিব আহত চৈতন্যকুমার পাল জানান, তারা স্বাধীনতা চত্ত্বরে পৌঁছে রাস্তার ওপরে বসে পড়লে পুলিশ হামলা করে। এছাড়া সংগ্রাম কমিটির নেতাদের উদ্দেশ্য করে নানা খিস্তি-খেউড় করতে থাকে। পুলিশের এমন ভূমিকায় সাধারণ মানুষের মাঝে তীব্র অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে। জলাবদ্ধ মানুষ সংঘবদ্ধ হয়ে এ ঘটনার প্রতিবাদে স্থানীয় পশু হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করে।
সমাবেশে পুলিশের হামলায় আহত সংগ্রাম কমিটির নেতা ইকবাল কবির জাহিদসহ অন্য নেতারা বক্তৃতা করেন।
এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিসুর রহমান দাবি করেন, আন্দোলনকারীরা পুলিশের ওপর চড়াও হলে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
তিনি পুলিশি হামলার কথা অস্বীকার করে বলেন, ‘জলাবদ্ধ এলাকার মানুষের জন্যে সরকার ইতিমধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। তাদের সড়ক অবরোধ করার কী দরকার!’
গত দুই মাসের জলাবদ্ধতার কারণে ভদহ এলাকার মানুষ ক্ষুব্ধ। পানি নিষ্কাশনে মাত্র একটি এসকেভেটর ব্যবহার করায় পানি নামছে খুব ধীরে। দ্রুত পানি নামাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে জলাবব্ধ যশোরের অভয়নগর, মণিরামপুর ও কেশবপুরের মানুষ আন্দোলন-সংগ্রাম করছেন। পানি থেকে বাঁচতে সংগ্রাম কমিটির আন্দোলনের কর্মসূচি হিসেবে গত ৩০ সেপ্টেম্বর আজকের এই অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছিল।
সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক রণজিত বাওয়ালী জানান, সকাল ১০টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত রাজপথে অবস্থান কর্মসূচি পালনের কথা ছিল। কিন্তু পুলিশ তাদের রাস্তায় জড়ো হতেই দেয়নি। এছাড়া পুলিশ নারী-পুরুষ-নির্বিশেষে লাঠিপেটা করে তাদের আহত করেছে।